অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সিরিয়ার বিরোধী নতুন নেতাকে সমন্বিত ভাবে কাজ করতে হবে: মাইকেল রায়ান


গত সপ্তাহান্তে প্রবাসে সিরিয়ার বিরোধী গোষ্ঠির নের্তৃত্বে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই পরিবর্তনের কারণ ও এর প্রভাব নিয়ে ওয়াশিংটনে Middle East Institute এর Scholar এবং James Town Foundations এর Senior Fellow , Dr. Michael Ryan কথা বলেছেন ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে।

প্রবাসী কুর্দি বংশোদ্ভূত আবুল বাসেত সিয়েদাকে Syrian National Council এর নের্তৃত্বে নির্বাচিত করা হয় এই গেলো সপ্তাহান্তে ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত পরিষদের বৈঠকে । তাঁর পুর্বসুরি বুরহান ঘালিউনের পরিবর্তে তাকে নির্বাচিত করার কি কারণ থাকতে পারেএ সম্পর্কে ড মাইকেল রায়ান বললেন ড সিয়েদা হচ্ছেন একজন ধর্মনিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবি। তবে সিরিয়ার প্রবাসী বিরোধীদের মধ্যেই তিনি অন্তর্ভুক্ত। সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিল ঐ পরিষদে ইসলামপন্থিদের আধিপত্য হ্রাসের চেষ্টায় এই পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা ধর্মীয় এবং জাতিগোষ্ঠিগত সংখ্যালঘুদের এই পরিষদে অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছে, এবং সিয়েদা যিনি মূলত কুর্দি , জাতিসগোষ্ঠিগত সংখ্যালঘুর প্রতিনিধিত্ব করছেন , যারা এ পর্যন্ত এই বিরোধী আন্দোলনে খুব বেশি সক্রিয় থাকেনি। কিন্তু তার পরও প্রশ্ন থেকে যায় যে তারা কি সত্যি সত্যিই সংখ্যালঘু নের্তৃত্ব মেনে নেবে ?

এটা বোধ হয় ঠিক যে সিয়েদার সামনে অনেক বড় বড় বাধা রয়েছে। তিনি তো কেবল সংখ্যালঘুই নন কিংবা কেবল ধর্মনিরপেক্ষই নন, এর চেয়ে ও বড় কথা হলো যে সিরিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিলের সঙ্গে ফ্রি সিরিয়ান আর্মির সম্পর্ক ও খুব ভাল নয়। এই ফ্রি সিরিয়ান আর্মিই তো সিরিয়ার ভেতরে লড়াই করে চলেছে। এটা খুবই জরুরী যে তাদের মধ্যে সম্পর্কটা ভাল হোক। আসলে সিরিয়ার দিকে তাকালে দেখা যাবে যে প্রায় দুশোটি ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠি যারা সিরিয়ার ভেতরে লড়ছে ঠিকই কিন্তু তাদের মধ্যে কোন ধরণের সমন্বয় নেই। এই পরিস্থিতির হয়তো পরিবর্তন ঘটবে। তা হলে এই নতুন নের্তৃত্ব নির্বাচনের প্রভাব কি পড়বে গোটা আন্দোলনে? জবাবে ড রায়ান বলেন যে সিয়েদা যদি সত্যিকারের সাফল্য অর্জন করতে চান তা হলে তাকেঁ সিরিয়ার ভেতরের বিভিন্ন দলের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে। সুইডেনে গিয়ে বাইরে থেকে আন্দোলন পরিচালনা না করে , অভ্যন্তরে সমন্বিত লড়াই চালাতে হবে। তবে এটা ঠিক যে সিরিয়ার ভেতরে ও এখন আর বিরোধীদের লড়াই একবারে বিচ্ছিন গোষ্ঠির লড়াই নেই । এখন সে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র ও মারাত্মক লড়াই চলছে। সিরিয়ার সরকার যেমন তাদের সহিংসতা বৃদ্ধি করছে , তেমনি বিরোধীরা ও তুমুল লড়াই চালাচ্ছে।

এ দিকে ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী বেন ইয়ামিন নেতেনইয়াহু বলেছেন যে সিরিয়াকে সহযোগিতা করছে ইরান ও লেবাননী জঙ্গি গোষ্ঠি হেজবুল্লাহ , সেটা ইসরাইলের জন্যে উদ্বেগজনক বিষয়।

তিনি বলেন যে এটা সত্যি কথা যে সিরিয়া লেবাননী ও ইরানিদের কাছ থেকে সাহায্য পাচ্ছে তবে আসল কথা হচ্ছে সিরিয়ার খুব বেশি সাহায্যের দরকার নেই। বাশার আল আসাদ নৃশংস ভাবে বিদ্রোহ দমন করছেন যেমনটি করেছিলেন তার বাবা , আরও নৃশংস ভাবে ৭০ ও আশির দশকে। এটি একটি পুলিশ রাষ্ট্র এবয বাশার অাল আসাদের সমর্থনেও সেখানে অনেকেই আছে কারণ তারা ইসলামপনন্থিদের ভয় করে।

কিন্তু সামনের দিনগুলাতে কি হবে ? বাশার আল আসাদ কি ক্ষমতা ত্যাগ করবেন , নাকি শেষ পর্যন্ত মাটি কামড়ে পড়ে থাকবেন। ড উইলয়াম রায়ান বলেন যে বাশার আল আসাদ শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন। কারণ মূল বিষয়টা বাশার আল আসাদ নয় , মুল বিষয় হলো শাসককুল আওলাকি গোষ্ঠি। সেনাবাহিনীতে প্রশাসনে সংখ্যাগরিষ্ঠ হচ্ছে এই আওলাকি গোষ্ঠি। তাদের কাছে যাবার মতো বিকল্প আর কোন জায়গা নেই। তবে আমার মনে হয় বিষয়টি আরও সহিংস হবে , আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আরও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে । আন্তর্জাতিক সম্প্রদাকে ভাবতে হবে কি ভাবে এই আন্দোলনের সঙ্গে পুরোপুরি সম্পৃক্ত হওয়া যায়।

XS
SM
MD
LG