অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

করোনা নিয়ে মানুষের অন্তহীন ভোগান্তি


বাংলাদেশে করোনার গতি প্রকৃতি নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক জারি রয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তর বরাবরই টেস্ট কম করার পক্ষে। কারণ তারা মনে করে টেস্ট কম হলে শনাক্ত কম হবে। এতে করে মৃত্যুর সংখ্যাও কমে যাবে। কিন্তু জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। তাদের যুক্তি টেস্টের সুযোগ কমে যাওয়ায় মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। হাসপাতালে বেড খালি থাকলেও অনেকেই যাচ্ছেন না। এতে সংক্রমণ বাড়বে। মানুষ সচেতন হবেনা। জুলাই মাসের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যায় টেস্ট কমলেও সংক্রমণের হার ২৫ শতাংশের কাছাকাছি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন চার পাঁচজনের নমুনা পরীক্ষা হলে একজনের শরীরে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা মনে করেন প্রয়োজন ছাড়া কেউ টেস্ট করতে আসে না। তাই সংক্রমণ বেশি। সাবেক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বেনজির আহমেদ বলেছেন যতবেশি টেস্ট ততবেশি সংক্রমণ। এখনতো আমরা অন্য পথে হাঁটছি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুন নূর তুষার মনে করেন বাংলাদেশের মানুষের সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করার ক্ষমতা অনেক বেশি। যে কারণে মৃত্যুর হার ততটা নয়। তবে তিনি সরকারি হিসাবের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। বলেন, তার হিসাবে বহুগুন বেশি মানুষ মারা গেছেন। তার যুক্তি করোনা উপসর্গে যারা মারা গেছেন তাদের কোন তথ্য নেই সরকারি হিসাবে। অথচ বাংলাদেশে বেশিরভাগ মানুষই করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। সরকারি গাইডলাইন অনুযায়ী তাদেরকে করোনা রোগী হিসাবেই গণ্য করার কথা।কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।

গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা টেস্ট কম হলেও শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে। তিন হাজার ৫৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এসময় মারা গেছেন ৪১ জন। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন দুই হাজার ৭০৯ জন।

ওদিকে ভুয়া করোনা টেস্টের রমরমা ব্যবসার খবর দেশ বিদেশের মিডিয়ায় শিরোনাম হওয়ার পর স্বাস্থ্য দপ্তর এখন কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে। যদিও দুর্নীতি আর ব্যর্থতার দায়ে কারো বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। একটি বেসরকারি হাসপাতালের দুটি শাখা সিলগালা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছেন একাধিক ব্যক্তি। এই অবস্থায় বিদেশ গমেনেচ্ছু বাংলাদেশিদের জন্য কোভিড -১৯ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়ে যাওয়ার কারণে ইতালি, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান বাংলাদেশিদের ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। করোনা সার্টিফিকেটের জন্য সরকার ১৬ টি ল্যাবকে নির্ধারণ করে দিয়েছে। বিদেশ যেতে হলে এদের কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিতে হবে। প্রথমে বলা হয়েছিল বাসা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা যাবে। এখন বলছে নির্ধারিত বুথেই নমুনা দিতে হবে যাত্রীদের। বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণে যাত্রীদের অন্তহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে।

please wait

No media source currently available

0:00 0:03:32 0:00
সরাসরি লিংক


XS
SM
MD
LG