টিকা নিয়ে বিশ্বব্যাপী রাজনীতি যেমন আছে তেমনি বিতর্কও হচ্ছে দেশে দেশে। টিকা আবিষ্কারের আগাম ঘোষণা দিয়েছে চীন ও রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যতো আছেই। ধনী দেশগুলো টিকা বাজারজাত করার জন্য অর্থায়ন করে রেখেছে। বাংলাদেশ টিকা তৈরি করছে না। তাই বিতর্ক একমুখী। কোন টিকা নিরাপদ। কোনটা আগে আসবে। কোন দেশ থেকে পাওয়া যাবে। এসব নিয়েই জোর তৎপরতা। অক্সফোর্ডের টিকার ব্যাপারে শুরুতে বেশ আগ্রহী ছিল বাংলাদেশ। এখনও যে আগ্রহ কমে গেছে তাও নয়। কিন্তু হঠাৎ করেই সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ঘোষণা দিয়ে বসেন, নভেম্বরে রাশিয়ার টিকা আসবে বাংলাদেশে। এরপর থেকেই বিশেষজ্ঞরা বলতে শুরু করেছেন, যে টিকার ট্রায়ালই শেষ হয়নি সেটা কী করে নভেম্বরে আসবে! বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক বিজ্ঞানী অধ্যাপক মোজাহেরুল হক মনে করেন, যে টিকাই আমরা আনিনা কেন তা নিরাপদ, কার্যকর ও মানসম্মত কিনা আগে দেখতে হবে। আমাদের দেশে এর ক্ষতিকর কোনো প্রভাব পড়ে কিনা তাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ট্রায়াল ছাড়া নিশ্চিত হওয়া যাবে না। তাছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও এই টিকার ছাড়পত্র দেয়নি। জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলামও একই মত পোষণ করছেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, রাশিয়ার টিকা আনা হবে কিনা তা এখনও টেকনিক্যাল কমিটিতে আলোচনা হয়নি। ট্রায়াল ছাড়া এই টিকা কিভাবে আসবে। এখানে কী প্রতিক্রিয়া হয় তা না দেখে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে না। রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা ডা. মোশতাক হোসেন বলেছেন, রাশিয়াতো তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শুরু করলো মাত্র। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের পর এ নিয়ে ভাবা যেতে পারে। এটা এখন একদম প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কর্মরত বিশ্ব ব্যাংকের স্বাস্থ্য বিজ্ঞানী ডা. জিয়াউদ্দিন হায়দার মনে করেন, বিশ্ব ব্যাংকের ১২ বিলিয়ন ডলারের টিকা তহবিল থেকে টাকা পেতে হলে বাংলাদেশকে এখনই তৎপর হতে হবে। এজন্য দরকার একটি এ্যাকশন প্ল্যান। তার ভাষায়, করোনা ভ্যাকসিন, অর্থায়ন, ক্রয়-বিতরণসহ একটি সুনির্দিষ্ট এ্যাকশন প্ল্যান ছাড়া এই তহবিল থেকে টাকা পাওয়া যাবে না।
ওদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৪৩৬ জন।