করোনার দ্বিতীয় সংক্রমণ বিশ্ব্যাবপি আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এর মধ্যে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিন ছাড়াই দ্বিতীয় সংক্রমণ রুখতে হবে। সংস্থাটির জরুরি বিভাগের পরিচালক মাইকেল রায়ান বলেছেন, ভ্যাকসিনের দিকে তাকিয়ে লাভ নেই। ভ্যাকসিন এখনই আসছে না। শুধু তাই নয়, ভ্যাকসিন কোন যাদুকরি সমাধান নয়, একথাও বলেছেন।
মাইকেল রায়ানের মতে, উল্লেখযোগ্য পর্যায়ে সবার কাছে ভ্যাকসিন পৌঁছাতে চার থেকে ছয় মাস সময় লেগে যাবে। খবরটি বাংলাদেশের মানুষকেও আতঙ্কিত করেছে। যদিও করোনার দাপট এখন পর্যন্ত সহনীয় রয়েছে। তবে করোনা নতুন শক্তি নিয়ে বাংলাদেশে আসছে প্রতিদিনের স্বাস্থ্য বুলেটিন দেখলেই তা বুঝা যায়।
গত তিন দিনের স্বাস্থ্য বুলেটিন বলছে, শীত আসার আগেই দ্বিতীয় সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমণের গতি ঊর্ধ্বমুখি। ২ হাজার ৩৬৪ জন সংক্রমিত হয়েছেন। গত ২রা সেপ্টেম্বরের পর এটাই সর্বোচ্চ সংক্রমণ। সরকারের তরফে বলা হয়েছে, শীতে করোনা আবার ঝেঁকে বসতে পারে। আলামত অবশ্য সেই রকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। রাজধানীতে বৃহস্পতিবার থেকে মোবাইল কোর্ট অভিযান শুরু করেছে। মাস্ক না পরায় জরিমানা করা হয়েছে।
এখনও অনেকেই মাস্ক পড়ার ব্যাপারে উদাসীন। ধর্মীয় উপাসনালয়ে কাউকে মাস্ক ছাড়া প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। সরকারি অফিসগুলোতেও মাস্ক ছাড়া সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এখনও ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ পুরো কার্যকর হয়নি। গলায় বাহারি মাস্ক ঝুলিয়ে রাখার নতুন এক স্টাইল চালু হয়েছে। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আচরণ বিপদ ডেকে আনবে।
করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট ছাড়া কোন প্রবাসী দেশে ফিরলে তাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে নেয়া হবে এমনটা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ বিমান ব্যাংকক, ম্যানচেস্টার, মাস্কাট, কাঠমান্ডু ও কুয়েত রুটে ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুন নুর তুষার মনে করেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে। কারণ মানুষ সচেতন নয়। শীতে হাঁপানি নিউমোনিয়ায় মানুষ মারা যায়। করোনা যদি আন্দরমহলে পৌঁছে যায় তখন বিপদ বাড়বে। ডা. তুষার বলেন, অফিস আদালত ও হাটবাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে সংক্রমণ নাগালের মধ্যে রাখা কঠিন হবে।