বাংলাদেশ সম্পর্কে কাতার ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার একটি রিপোর্ট নিয়ে প্রতিবাদ জানানো অব্যাহত রয়েছে। ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’-শিরোনামে প্রচারিত রিপোর্টকে বাংলাদেশ সরকার মিথ্যা, মানহানিকর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রনোদিত বলে উড়িয়ে দিয়েছে।সর্বশেষ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এই রিপোর্ট চ্যালেঞ্জ করে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন।
সোমবার এই রিপোর্টটি প্রচারের পর থেকে ঢাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। আল জাজিরা টেলিভিশনে প্রচারের আগেই এক ঘণ্টার এই অনুষ্ঠানটি ইউটিউবে ছড়িয়ে দেয়া হয়। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর সেনা সদর থেকে নিন্দা জানানো হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এই রিপোর্টকে দেশ বিরোধী বলে বর্ণনা করেছেন। আসলে কি আছে এই রিপোর্টে ঢাকার কোন সংবাদ মাধ্যম থেকে বলা হয়নি। ফলাও করে প্রতিক্রিয়া ছাপা হচ্ছে। টেলিভিশন ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমও একইভাবে প্রচার করছে। কিছুটা ব্যতিক্রম ডেইলি স্টার। এক সম্পাদকীয়তে স্টার বলেছে, আল জাজিরার প্রতিবেদনটি বাংলাদেশে প্রচার ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাধাগ্রস্ত বা অবরুদ্ধ না করা সরকারের একটি সুচিন্তিত ও ভালো সিদ্ধান্ত।
প্রচারে বাধা দেয়া হলে দর্শক-পাঠকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতো।তবে প্রতিবেদনের বিষয়ে সরকারের দেখানো প্রতিক্রিয়ায় অনুরূপ সুচিন্তিত অবস্থান দেখানো হয়েছে বলে মনে হয়নি।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, কোন বিষয়ে সরকার প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে তা প্রকাশ না করে, কেবলমাত্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা হচ্ছে। যাতে এক অদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এখন পর্যন্ত আল জাজিরার প্রতিবেদনের কোন অংশই প্রকাশ করা হয়নি। এখানেই শেষ নয়। আমরা যে সম্পাদকীয় প্রকাশ করছি সেখানেও ঘটনার কোন বিবরণ নেই। কোন ব্যক্তির নাম ভিডিওতে দেখানো হয়েছে। ঢাকার এক অনুষ্ঠানে উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিদের সঙ্গে দণ্ডিত দুই পলাতক আসামির অংশগ্রহণ এবং ক্যামেরার সামনে বা পেছনে কারা কথা বলেছেন তাও প্রকাশ করা হয়নি। ডেইলি স্টার সম্পাদকীয়তে এই পরিস্থিতিকে কার্পেটের নিচে ময়লা চাপা দেয়ার সঙ্গে তুলনা করেছে। রিপোর্টের বিবরণ কেন দেয়া হচ্ছে না এর কারণও ব্যাখ্যা করেছে পত্রিকাটি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা, হয়রানি, গ্রেপ্তার, এমনকি বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেয়ার ঘটনাতো আছেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ঢাকায় সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, আল জাজিরা ভুল তথ্য প্রচার করেছে। তারা জানে না প্রধানমন্ত্রী কখনও কাউকে তার বডিগার্ড নিযুক্ত করেননি। তার দলের অগণিত নেতাকর্মীই তাকে নিরাপত্তা দিয়ে চলেছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আল জাজিরার প্রতিবেদন উদ্দেশ্যমূলক ও অপপ্রচারের নোংরা বহিঃপ্রকাশ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করছে, সরকারের সমালোচনাও করছে। দেশের এতো ভাইব্রেন্ট এবং এক্টিভ মিডিয়া যেখানে কোনো ধরনের তথ্য পায়নি সেখানে আল জাজিরায় শেখ হাসিনাকে নিয়ে অসত্য তথ্য প্রচার অত্যন্ত নিন্দনীয়।