এ বছর চিকিত্সা শাস্ত্র ও পদার্থ বিদ্যায় নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে । চিকিত্সা ক্ষেত্রে ইওরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার তিনজন বিজ্ঞানী এই সম্মানিত পুরস্কার পেয়েছেন, আর পদার্থ বিজ্ঞানে পেলেন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী তিন বিজ্ঞানী । সোমবার যখন চিকিত্সা বিষয়ে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হলো, তখন কানাডার ডঃ র্যালফ্ স্টাইনম্যান সেই সাফল্যের খবর আর জানতে পারেন নি । ডঃ স্টাইনম্যান যিনি দীর্ঘদিন ধরে মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিযে গবেষণা করেছেন, তিনি ক্যান্সারে ভুগছিলেন, ঠিক তিনদিন আগে তিনি মারা যান এবং নোবেল কমিটি যখন অপর দুজনের সঙ্গে এই একই গবেষণার জন্য তার নাম বেছে নেন, তখনও তিনি জীবিত ছিলেন । পরে খবরের শিরোনাম হলো ‘মৃত্যু নোবেল জয়ীর পুরস্কার কেড়ে নিতে পারে না’ । গতকালই তো তার নাম ঘোষণার কথা জানাতে গিয়ে যখন টেলিফোনের রিং বেজে চলেছে, তখন নোবেল ফাউণ্ডেশনের প্রতিনিধি তার ই মেলে এই সম্মানিত পুরস্কারের খবরটি জানিয়ে দিলেন । কিন্তু ডঃ স্টাইনম্যান ইমেল আর দেখবেন না, ফোনের বার্তাও শুনবেন না । যকৃতের ক্যান্সার তার জীবন কেড়ে নিয়েছে । তবে তিনি শেষ দিন পর্যন্ত দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে গবেষণা করে যান । সেই গবেষণার জন্যই নোবেলের স্বীকৃতি ।
ডঃ স্টাইনম্যান চার বছর ধরে ক্যান্সারে ভুগছিলেন এবং তার গবেষণালব্ধ পদ্ধতিতে নিজের চিকিত্সা করছিলেন । তার নিজের দেহকেই তিনি গবেষণার আধার করে তুলেছিলেন । নোবেলের নিয়ম অনুযায়ী কোন মৃত ব্যক্তিকে এই পুরস্কার দেওয়া হয় না । তাই সোমবার যখন ডঃ স্টাইনম্যানের মেয়ে নিউইয়র্কে রকেফেলার বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে তার বাবা কাজ করতেন, সেখানে টেলিফোনে খবরটি জানালেন, সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালযের প্রেসিডেন্ট মার্ক টেসিয়ার লাভিন নোবেল কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে ফোন করলেন । কমিটি এই নজীরবিহীন ঘটনায় কিছুটা দ্বিধার সম্মুখীন হলেন । নয় সদস্যের পরিচালকমণ্ডলী আইনবিদদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন, তারপর সিদ্ধান্ত হলো । ডঃ স্টাইনম্যানের নোবেল পুরস্কার ঘোষণার সময় কমিটি জানতেন তিনি জীবিত । তাই এই পরস্কার বহাল থাকবে । ডঃ স্টাইনম্যানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ডঃ ব্রুস বয়টার এবং লুক্সেমবার্গের জুলস হফম্যান চিকিত্সা বিষয়ে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ।
এ বছর পদার্থ বিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেলেন আমেরিকার সল পার্লমুটার ও এ্যাডাম রিস এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভব ব্রায়ান স্মিট । তারা বিস্ফোরিত নক্ষত্র পর্যবক্ষণের মাঝে বিশ্বব্রক্ষ্মাণ্ডের সম্প্রসারণের বিষয় নিযে গবেষণা করেন ।