আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম অন্তত গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেলেও বাংলাদেশ এতে কোনভাবেই লাভবান হচ্ছে না । আর এর কোন উদ্যোগও নেই। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, অধিকাংশ দেশ তেল মওজুদ করলেও, বাংলাদেশের এক্ষেত্রে রয়েছে সমস্যা। ফলে বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও সরকার ও ভোক্তারা কোনভাবেই লাভবান হচ্ছে না। বর্তমানে করোনা সংকটসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্থিক খাতের বিপর্যয়ে জ্বালানি তেলের দাম নেমে এসেছে ব্যারেল প্রতি ২০ থেকে ২৩ ডলারে। অথচ গত জানুয়ারিতেও এর দাম ছিল ৭০ ডলার প্রতি ব্যারেল। গত বছর ছিল ৬৫ থেকে ৬৬ ডলার। এমনকি ১৯৯৯ সালেও তেলের বাজারে মন্দার সময় দাম ছিল ব্যারেল প্রতি ৩০থেকে ৩২ ডলার।
বাংলাদেশের জ্বালানি তেলের বাজার ও বিপণন নিয়ন্ত্রণ করে এককভাবে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বা বিপিসি। বিপিসি বলছে, করোনা ভাইরাসের কারণে আগে আমদানি করা ৫০ শতাংশ তেল কম বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশে জ্বালানি তেল কেনার জন্য রয়েছে আন্তর্জাতিক মেয়াদী চুক্তি। বিশ্বে তেলের দাম কমলেও এ কারণেই চুক্তির আওতায় এপ্রিলে তেল এসেছে চুক্তির নির্ধারিত ঐ আগের দামেই। মে মাসেও আসবে। তেল কেনার ক্ষেত্রে চুক্তি থাকা এবং তেল মওজুদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় এত বড় সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের।
এক্ষেত্রে জ্বালানি সম্পদ মন্ত্রী নসরুল হামিদ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, করোনাকালে তেল বিক্রি কম হওয়ায় তাদের লোকসান হচ্ছে। এদিকে, বাংলাদেশের প্রভাবশালী গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বা সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, জ্বালানি তেল কেনার ক্ষেত্রে দীর্ঘকালীন চুক্তির বিষয়টি পুন:বিবেচনা করতে হবে। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে স্বচ্ছতারও প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, অভ্যন্তরীণ ও মওজুদ রাখতে না পারার দুর্বলতার কারণে জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে বড় একটি সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে বাংলাদেশের। আর এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশীয় ভোক্তারাও।