অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কাতারে বিশ্বকাপের জন্য নির্মানাধীন স্টেডিয়ামে অভিবাসী শ্রমীকদের জোর করে অতিরিক্ত কাজ করানো হচ্ছে: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল


অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, কাতারে ২০২২ সালের বিশ্বকাপের জন্য নির্মানাধীন প্রধান স্টেডিয়ামে কাজ করা অভিবাসী শ্রমীকরা অভিযোগ করেছে, তাদেরকে জোর করে কাজ করানো হচ্ছে। সংস্থাটি দাবি করেছে, অভিবাসী শ্রমীকরা নিয়োগকারীদের হাতে পদ্ধতিগত অপব্যবহারের শিকার। লন্ডন থেকে ভয়েস অফ আমেরিকার হেনরি রিডজওয়েল এর প্রতিবেদন শোনাচ্ছেন তাওহীদুল ইসলাম।


নির্মানাধীন খলিফা স্টেডিয়ামের ১৩০ জন অভিবাসী নির্মান শ্রমীকের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রমীকরা তাদের অধিকার খর্বের অভিযোগ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে নোংরা বাসস্থান এবং আর্ন্তজাতিক আইনের লংঘন করে জোর করে অতিরিক্ত কাজ করানো। আর ঐসব শ্রমীকের বেশীর ভাগই বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল থেকে এসেছে। একজন শ্রমীক বলছিলেন-

“প্রতি মাসে বেতন দুইশো ডলার। যা-নিয়োগকারীর ফি দেবার জন্য করা ঋণ পরিশোধ, পরিবারে জন্য বাড়িতে অর্থ পাঠানো এবং আমার জীবনযাপনের জন্য যথেষ্ট নয়।“

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছিল- অনেক শ্রমীক জানিয়েছে, দেশের নিয়োগকারীকে তাদের চার হাজার তিনশো ডলারের বেশী ফি দিতে হয়েছে। ছয়জনের বেশী শ্রমীক বলেছেন, তাদের যে বেতন পাওয়ার কথা ছিল, তার থেকে কম পান। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা নির্ধারিত বেতনের অর্ধেক এবং কখনো কখনো কোন বেতনই পান না।

আর যদি কোন শ্রমীক অভিযোগ করেন, তাহলে তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত অথবা বেতন বন্ধ করে দেবার হুমকী দেয়া হয়। একজন অভিবাসী শ্রমীক বলছিলেন—

“আমি যদি চাকরী হারাই তারা আমাকে দেশ থেকে বের করে দেবে। কিন্তু এখনো আমাকে অনেক ঋণ পরিশোধ করতে হবে।“

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছিল, গত বছর পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু কাতারের তথাকথিত ‘কাফালা’ কর্মসংস্থান পদ্ধতিই প্রধান সমস্যা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর জেমস লিনচ বলেন-

“পদ্ধতিটি কর্মীদের উপর নিয়োগকারীদের অধিক নিয়ন্ত্রন দেয়। সুনির্দিষ্ট ভাবে কর্মীর দেশ ত্যাগ অথবা চাকরী পরিবর্তনের অধিকার খর্ব করার ক্ষমতা থাকে নিয়োগকারীর।“

কাতার অভিবাসী শ্রমীকদের কাজের পরিবেশ উন্নত করার ওপর জোর দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে মজুরী সুরক্ষা পদ্ধতি।

কিন্তু অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মনে করে, এটাই যথেষ্ট নয়। এবং ফুটবলের বিশ্ব সংস্থা ফিফা’র বিষয়টি নিয়ে কথা বলা উচিত । জেমস লিনচ বলেন-

“শক্ত পদক্ষেপ আমরা খুব অল্পই দেখতে পাচ্ছি। এবং আমরা এর মাধ্যমে- কাতারের অভ্যন্তরীন পুর্নগঠনের জন্য প্রবল জনসমর্থন এবং বিশ্ব কাপের স্টেডিয়াম গুলোতে শ্রমীকদের অবস্থা সম্পর্কে সত্যিকারের তদন্তের কথা বোঝাতে চেয়েছি।“

ফিফা মানবাধিকারকে গুরুত্ব সহকারে নেয়ার ওপর জোর দিয়েছে এবং পরিস্থিতির উন্নয়নে কাতারের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে।

বিশ্বকাপের প্রকল্পগুলোতে বর্তমানে পাঁচ হাজারের মত অভিবাসী শ্রমীক কাজ করছে। যা আগামী দুই বছরের মধ্যে বাড়িয়ে ৩৬ হাজার করার পরিকল্পনা রয়েছে।

XS
SM
MD
LG