আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছে। একই সঙ্গে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার কথাও বলেছে।
সংগঠনটির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক মীনাক্ষি গাঙ্গুলী বলেছেন, রাফি হত্যার মধ্য দিয়ে এটা জোরালো হয়ে উঠেছে যে, বাংলাদেশ সরকারকে যৌন নির্যাতনের শিকারদের বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। শুধু তাই নয়, নির্যাতিতরা নিরাপত্তার সঙ্গে আইনগত প্রতিকার পাবেন তাও নিশ্চিত করতে হবে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেছে, গত ২৭শে মার্চ নুসরাত যখন পুলিশে অভিযোগ করতে যান তখনকার একটি ভিডিওতে দেখা যায় অফিসার ইনচার্জ তাকে বলছেন, ঘটনাটি তেমন বড় কিছু নয়। এরপর থেকে নুসরাতের ওপর মামলা প্রত্যাহারের চাপ আসতে থাকে। মামলা না তুললে হত্যা করা হবে এমন হুমকিও দেয়া হয়। কিন্তু নুসরাত ন্যায় বিচারের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন। মারা যাবার আগে নুসরাত তার পরিবারকে বলে গেছেন, মামলা তুলতে রাজি না হওয়ায় হামলাকারীরা আগুন ধরিয়ে দেয়।
যৌন হয়রানির বিচার প্রসঙ্গে হতাশা ব্যক্ত করে মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, প্রধানমন্ত্রী যতই হত্যাকাণ্ডে দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করার ঘোষণা দেন না কেন বাস্তবে শাস্তি দেয়ার রেকর্ড নেই বললেই চলে। মামলার দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা, সামাজিক মানহানিসহ থানা বা হাসপাতালে উল্টো নিজের ওপর দোষ চাপানোর ভয়ে ভুক্তভোগীরা আইনের আশ্রয় নিতে চান না। মামলা তুলে নেয়ার হুমকিতো আছেই। নুসরাত হত্যা মামলায় ১৩ জনের মধ্যে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে দু’জন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছে, প্রিন্সিপালের নির্দেশেই তারা নুসরাতকে হত্যা করে।
ওদিকে ধর্ষণ বা নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুদের জবানবন্দি শুধুমাত্র একজন মহিলা ম্যাজিস্ট্রেট গ্রহণ করতে পারবেন এ মর্মে সুপ্রিম কোর্ট থেকে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।