অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

রোহিঙ্গা সংকট অন্যদিকে মোড় নিতে পারে: আশঙ্কা কক্সবাজার জেলা প্রসাশনের


রোহিঙ্গা নেতা মহিব-উল্লা’র গতিবিধি এখন নজরদাড়িতে। আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস এর চেয়ারম্যান মহিব-উল্লা সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্য সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন মনে করে গত ২৫শে আগস্ট মহাসমাবেশে মহিব-উল্লা যে বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রত্যাবাসন বিরোধী। দেশি বিদেশী কিছু এনজিওর মতামতেরই প্রতিফলন। প্রত্যাবাসন ব্যর্থ হওয়ার পেছনে এদের হাত রয়েছে এমনটাই বলা হচ্ছে।

মহিব-উল্লার বিরুদ্ধে অন্তত তিনটি অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ২ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গত ২৫ শে আগস্ট যে মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয় তার পেছনে মূল উদ্দেশ্য কী ছিলো? কোন কোন এনজিও এর পেছনে ইন্ধন জুগিয়েছে। প্রায় ২০০ এনজিও কক্সবাজারে কাজ করছে, এর মধ্যে বেশ কিছু এনজিও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিরোধী প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে এমনটাই বলা হচ্ছে।

মহাসমাবেশে মহিব-উল্লা ৫টি শর্ত জুড়ে দেন। বলেন, প্রত্যাবাসন শুরু করতে হলে আগে তাদেরকে নাগরিকত্ব দিতে হবে, ফেরত দিতে হবে ভিটেমাটি জমিজমা, আকিয়াব জেলায় আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের নিজ বাড়িতে ফেরত, বন্দি রোহিঙ্গাদের মুক্তি, হত্যা ও ধর্ষণের বিচার, অবাধ চলাফেরা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। মহাসমাবেশে মহিব-উল্লা বলেন, নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে রোহিঙ্গারা ফিরবে না। যদি ফিরে যেতেই হয় তাহলে সবাই একসঙ্গে সীমান্ত পাড়ি দেবে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের তরফে সরকারের কাছে যে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে তাতে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের বাইরে চলাচল নিষিদ্ধ করতে বলা হয়েছে। ক্যাম্পের বাইরে নানা ধরণের অপরাধের সঙ্গে রোহিঙ্গারা যুক্ত হচ্ছে। গত দু’বছরে ক্যাম্প ছেড়ে ৫৫ হাজার ১ জন পালিয়ে গিয়ে ছিল। অনেককে ফেরত আনা হয়েছে। ৪ হাজার ৯ জনকে দেশের বিভিন্ন স্থানে আটক করা হয়েছে। ৬২৩ জনকে মোবাইল কোর্ট বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে এ পর্যন্ত ৪৬টি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে।

জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, স্থানীয় জনগণের মধ্যে এ নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে। পরিণতিতে অদূর ভবিষ্যতে স্থানীয় জনগণ একত্রিত হয়ে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করতে পারে-রিপোর্টে এই আশঙ্কাও ব্যক্ত করা হয়। বলা হয়, স্থানীয় জনগণ ইতোমধ্যেই সভা-সমাবেশ করছে। দেশি বিদেশী এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার চাকরি লাভে ব্যর্থ এলাকার জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ক্যাম্প থেকে যাতে কেউ বের হতে না পারে সেজন্য সীমানা প্রাচীর নির্মাণের পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। বলেছে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করা জরুরি। রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে যাতে বিরোধ ও উত্তেজনা সৃষ্টি না হয় সে দিকটার প্রতি বিশেষ নজর রাখার তাগিদ দেয়া হয়েছে। ক্যাম্প এলাকায় নিরাপত্তা চেকপোস্টগুলোকে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা এখন কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থান করছে। দু’দফা প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

please wait

No media source currently available

0:00 0:02:36 0:00


XS
SM
MD
LG