বৃটিশ জনগণ ফাতিমা মানজির পাশেই
ব্রেক্সিট পরবর্তী বর্ণ বিদ্বেষের শিকার চ্যানেল ফোর এর নিউজ প্রেজেন্টার ফাতিমা মানজির পাশেই দাঁড়ালেন আইন প্রণেতা, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজ। জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়াতো আছেই।
পুরস্কার জয়ী ফাতিমা মানজির ‘অপরাধ’ ফ্রান্সের নিসে সন্ত্রাসী হামলার দিন তিনি হিজাব পড়ে খবর পড়ছিলেন। আর এটাকে নিয়ে দি সানের সাবেক সম্পাদক কেলভিন ম্যাকেঞ্জি একটি কলাম লেখেন। যা নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। এক দিনেই সতেরশ অভিযোগ বৃটিশ প্রেস রেগুলেটরি কমিটির কাছে জমা পড়ে। ম্যাকেঞ্জি তার কলামে লেখেন, ফ্রান্সের নিস শহরে যে দিন জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে সেদিন ফাতিমা খবর পড়ছিলেন। ম্যাকেঞ্জির কথায়, তার বিশ্বাস হচ্ছিল না ফাতিমা কি করে খবর পড়লেন, যেখানে তিনি নিজে একজন হিজাবধারী মুসলিম। নিস শহরের ঘটনাও ঘটিয়েছে একজন মুসলিম। তার এ মন্তব্যের পর এমপিরা প্রতিবাদ জানান। সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর জার্নালিস্ট’-এর কড়া সমালোচনা করে। চ্যানেল ফোর কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে ম্যাকেঞ্জির কলামকে আপত্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য বলে বর্ণনা করে। তারা বলে, একজন পুরস্কার জয়ী সাংবাদিককে কেন নির্দিষ্ট দিনে শুধুমাত্র তার ধর্মবিশ্বাসের কারণে খবর পড়া থেকে বিরত রাখতে হবে।
ফাতিমা মানজি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। টুইটারে হাজার হাজার মানুষ তাকে সমর্থন দিচ্ছে।
ওদিকে বর্ণ বিদ্বেষের প্রায় ১০ হাজার অভিযোগ পুলিশের কাছে জমা পড়েছে। এর মধ্যে বৃটিশ-জার্মান এক মহিলার অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। মিজ কারেন নামের এই মহিলা এলবিসি রেডিওকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এক মর্মস্পর্শী বর্ণনা দেন।
তিনি বলেন, আমি এখানে রয়েছি ১৯৭৩ সন থেকে। আমার স্বামী ছিলেন একজন সরকারি চিকিৎসক। আমার এখানে কোন দিনই সমস্যা হয় নাই। এখন আমি ভীত সন্ত্রস্ত।
লেবার দলীয় ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এন্ডি বার্নহাম বলেছেন, এখনই বর্ণ বিদ্বেষ থামাতে হবে। মনে রাখতে হবে বৃটিশ সমাজ ব্যবস্থা এগুলোকে প্রশ্রয় দেয় না। বৃটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাড বলেছেন, সরকার চুপ করে বসে থাকবে না। ওদের স্থান এক টেবিলে নয়।
লন্ডন থেকে মতিউর রহমান চৌধুরী