অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

টেকসই উৎপাদনের জন্য চাই নিরাপদ কর্মক্ষেত্র


আঙ্গুর নাহার মন্টি

ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার

সহযোগিতায় - ইউএসএআইডি ও ভয়েস অফ আমেরিকা

গত চারদশকে বাংলাদেশের কলকারখানা বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্র। শুধু পোশাক শিল্পেই এখন প্রায় এক কোটি শ্রমিক কর্মরত। অথচ দেশে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তার মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের অগ্রগতি এখনও আশাব্যঞ্জক নয়। রানা প্লাজা ধস ও তাজরীন গার্মেন্টসে অগ্নিকান্ডের ঘটনাগুলো তা-ই প্রমাণ করে।

পোশাক শিল্পে টেকসই উৎপাদনের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত, নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতনতা জোরদার, ভবনের সক্ষমতা বাড়ানো, পোশাকের উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ ও উদ্যোক্তাদের ইতিবাচক মনোভাব জরুরি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

আজকের বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপত্তার উপর। বাংলাদেশের প্রচলিত শ্রম আইনেও শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিধান রয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, উদাসীনতার কারণে এই বিধান বাস্তবায়ন হচ্ছে না; যার দায় সরকার, মালিক ও শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের উপরই বর্তায়। কারণ সরকার, মালিক ও শ্রমিকসহ সকল পক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

এদিকে যথাযথ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সত্ত্বেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার বিষয়টিও বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও প্রচলিত। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। অথচ এ ব্যাপারেও নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। সর্বশেষ রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্ত সকল শ্রমিক এবং তাদের পরিবার এখনো ক্ষতিপূরণ পায়নি।

এ প্রসঙ্গে বিলসের নির্বাহী পরিচালক সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, যেখানে ক্ষতিপূরণে কড়াকড়ি, ক্ষতিপূরণ বেশি ও আইনানুগ অধিকার হিসেবে স্বীকৃত থাকে সেখানে সরকার, মালিক ও দায়িত্বপ্রাপ্তরা নিরাপত্তাকে আরো সতর্কতার সঙ্গে নেয়। আমাদের দেশের মূল সমস্যা হচ্ছে, নিরাপত্তার জন্য যে পরিদর্শণ ব্যবস্থা ও শাস্তির দরকার তা নেই। যদিও এটি সত্য রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর গত দুবছরে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগের কারণে সতর্কতা বেড়েছে, পরিবেশের উন্নতি হয়েছে ও দুর্ঘটনা অনেক কমেছে।

একটি সার্বজনীন আইনের সুপারিশ করে তিনি বলেন, সকলের জন্য প্রযোজ্য এমন একটি সার্বজনীন আইন দরকার। শুধু প্রতিষ্ঠান না সকল ক্ষেত্রে নিরাপত্তার ব্যাপারটা বিবেচনা করতে হবে এবং সেই আইন বাস্তবায়ন দেখতে পরিদর্শক ও বিচার ব্যবস্থায় কড়াকড়ি আনা। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের পরিমাণ যেন এমন হয় ক্ষতিগ্রস্ত ও তাদের পরিবার মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারে, অসহায় জীবন নয়।

কর্ম পরিবেশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার আগের চেয়ে অনেক বেশি তৎপর। এই তৎপরতাকে সফল করে শ্রমিকের জন্য নিরাপদ কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করতে মালিক, শ্রমিক ও ক্রেতাসহ সব পক্ষকেই দায়িত্বশীল হতে হবে। নিতে হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

XS
SM
MD
LG