অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বিশ্ব পানি দিবস


বিশ্ব পানি দিবস
বিশ্ব পানি দিবস

শরীফ-উল-হক

ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার
সহযোগিতায়- ইউএসএআইডি ও ভয়েস অফ আমেরিকা

পৃথিবীতে তিনভাগ জল ও একভাগ স্থল থাকলেও মানুষের ব্যবহারের উপযোগী পানির পরিমাণ খুব সামান্য। জার্মানির পোটসড্যাম ইন্সটিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চ- এর গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বে বর্তমানে প্রায় একশ কোটি মানুষ সুপেয় পানি সঙ্কট মোকাবেলা করছে, সামনে যোগ হতে পারে আরো প্রায় পঞ্চাশ কোটি মানুষ । প্রতি বছরের মত এবারো ২০১৫ সালের ২২শে মার্চ সারা বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব পানি দিবস’। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘পানি এবং টেকসই উন্নয়ন’ ।

একদিকে যেমন মানুষের চাপ বাড়ছে সাথে বাড়ছে সুপেয় পানির চাহিদা । অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং মাত্রাতিরিক্ত পানি উত্তোলনের ফলে ঢাকায় মাটির নিচে পানির স্তর নিচে নেমে যাবার চিত্র ভয়াবহ । ১৯৮০ সালে যেখানে পানির স্তর ছিল ৫৬ ফুট নিচে, ২০১০ এ এসে তা দাঁড়িয়েছে ২০৮ ফুট । প্রতি বছর গড়ে নামছে ৭ ফুট করে । আর ২০১৫ তে কতটা নিচে গেলে পানি পাওয়া যাবে,তা আমরা অনুমাণ করতে পারি ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক কাজী মতিন ইয় আহমেদ বল্লেন,ঢাকার মানুষ যে ভাবে মাটির নিচের পানির উপর নির্ভরশীল,পৃথিবীর কোন দেশে এমনটি দেখা যায় না । ঢাকায় প্রাকৃতিক পানির উৎস এখন নেই বললেই চলে । যাও কিছু আছে,সেগুলোতে দূষণের মাত্রা এমন স্থানে পৌছেছে যে মাছ সহ জলজ প্রাণী খুঁজে পাওয়া দুস্কর ।যেমন বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষা নদী । ব্যবহার উপযোগী পানির জন্য ভরসা শুধু ঢাকা ওয়াসা। সেখানেও রয়েছে নানা অভিযোগ ।কিন্তু ঢাকা ওয়াসা’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলছেন ভিন্ন কথা ।তিনি বলছেন,ঢাকায় সবার জন্য পানি নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে পুরোনো পাইপের বদলে পুরো ঢাকায় নতুন পাইপ বসানো হচ্ছে, যাতে করে একশত ভাগ বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা যাবে।

ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ক্রমেই বাড়ছে ফলে পানি ব্যবহারের মাত্রা বাড়ছে । কৃষিকাজে পানি ছাড়া ফসল ফলানোর উপায় নেই । এনভায়রমেন্টাল রিসার্চ জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, বৈশ্বিক তাপমাত্রা গড়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে নতুন করে আরো প্রায় ৪৮ কোটি ৬০লাখ মানুষ তীব্র পানি সংকটে পড়বে । বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সবশেষ হিসেব অনুযায়ী নদীর সংখ্যা কমতে কমতে ৩১০ এ ঠেকেছে । যা নদী মাতৃক বাংলাদেশের জন্য অশুভ সংকেত ।

পানির ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না, দরকার পানি ব্যবহারে সচেতনতা এবং বৃষ্টির পানি ধরে সেটা পরবর্তীতে ব্যবহার উপযোগীতার জন্য প্রযুক্তি । এমনটাই বললেন বিশেষজ্ঞরা ।

XS
SM
MD
LG