অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

তরুনদের মানসিক সমস্যাকে গুরুত্ব দিতে হবে


আঙ্গুর নাহার মন্টি

ঢাকা রিপোর্টিং সেন্টার

সহযোগিতায় - ইউএসএআইডি ও ভয়েস অফ আমেরিকা

শরীরের মতো মনেরও রোগ আছে। তাই মনকে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। শরীরের কোনো অঙ্গ অসুস্থ হলে তা সারা শরীরে যেমন প্রভাব ফেলে তেমনি মনের উপর চাপ পড়লে বা মন অসুস্থ হলে শরীর ও মন দুটোতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই শরীরের মতোই মনের চিকিৎসাও জরুরি।

মন থেকে মানসিক শব্দটি এসেছে। অথচ আমরা মানসিক শব্দটিকে নেতিবাচকভাবে দেখি। বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা কম। আমাদের আশপাশে অনেক মানুষ বিশেষ করে তরুনদের মধ্যে মানসিক সমস্যা রয়েছে যা কেউ অনুভব করতে চান না। ভার্চুয়াল জগতের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি, অল্প বয়সে বিয়ে, প্রেমঘটিত হতাশা, পারিবারিক টানাপড়েন (দাম্পত্য, সন্তান-পিতামাতা, সহদর), নির্যাতনের (মানসিক, শারীরিক ও যৌন) শিকার হলে, কোনো ট্রমাটিক ঘটনার মুখোমুখি হলে, পরীক্ষায় খারাপ ফল, বেকারত্বসহ নানা হতাশার কারণে এই মানসিক সমস্যা বেড়েই চলেছে। একারণে আত্মহত্যার প্রবণতাও বাড়ছে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথের ডীন প্রফেসর ড. সাবিনা ফয়েজ রশিদ তরুনদের মানসিক সমস্যা প্রসঙ্গে বলেন, ‍অনেক বিষয় মানসিক। শারীরিক কারণেও হয়। মেয়েদের ঋতুচক্র বন্ধ হলেও টেনশন হয়। বন্ধুদের সঙ্গে দূরত্বও মনোকষ্টের কারণ হয়। আমরা এগুলো আমলে নেই না। শুধু বলি এটা করো না, ওটা করো না। অভিভাবক বা শিক্ষকরা বাস্তবতাগুলো নিয়ে কখনো ভাবি না।

কিশোর-কিশোরী ও তরুন-তরুনীদের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনগুলোর বিজ্ঞানসম্মত ধারণার বদলে কঠিন বিধিনিষেধের মধ্যে ফেলে দেয়া হয়। বাস্তবতাকে ভাল-খারাপের সংজ্ঞায় আবদ্ধ করে দেয়া হয় যা তাদের প্রাকৃতিক বিষয়গুলো সম্পর্কে ভুল ধারণা দেয়। জীবনের বাকেঁ বাকেঁ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় নেই বাস্তবধর্মী শিক্ষা। এসব সমস্যা নিরসনে ‍লাইফ কারিক্যুলামকে শিক্ষাক্ষেত্রে আবশ্যিক বিষয় হিসেবে যুক্ত করার উপর গুরুত্ব দিয়ে ড. সাবিনা বলেন, কমবয়সী ছেলেমেয়েরা আমাদের সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে পারে না। তাদের সেই পরিবেশ তৈরী করে দিতে হবে। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যাগুলো নিরসনে সামাজিক, শারীরিক ও মানসিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে প্রয়োজন (নিড) গুলো কি? ‍

মানসিক রোগ উপেক্ষা করার অন্যতম কারণ সামাজিক স্টিগমা। লোকলজ্জ্বার ভয়ে সমস্যা চিহ্নিত হওয়ার পরও অনেকে চিকিৎসা নিতে চান না। অথচ একটু কাউন্সিলিং, সাইকোথেরাপি ও মানসিক স্বাস্থ্য সেবাই পারে তরুনদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে মনোরোগ ও কষ্ট দূর করতে। এ ব্যাপারে ব্যাপক জনসচেতনতার বিকল্প নেই বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।

please wait
Embed

No media source currently available

0:00 0:02:48 0:00


XS
SM
MD
LG