অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ট্রাম্পের বিজয় গ্রহন করার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে চায় রাজনৈতিক মহল


যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডনাল্ড ট্রাম্পের অসাধারণ বিজয়, বিভাজন দূর করে গ্রহন করার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন দেশের রাজনৈতিক মহল। নির্বাচনের এই ফলাফল নিয়ে বিশ্বব্যাপী চলছে নানা বিতর্ক, আলোচনা ও সমালোচনা। নির্বাচন বিষয়ক বিশ্লেষক বিশেষজ্ঞ ও জরিপ পরিচালনাকারীরা বোঝার চেষ্টা করছেন কি কারনে নির্বাচনের আগের সকল জরিপ ভুল হলো। জিম মেলোনের রিপোর্ট শোনাচ্ছেন রোকেয়া হায়দার ও সেলিম হোসেন।

ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট পার্থী হিলারী ক্লিন্টন আশা করেছিলেন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ে খবর নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি তাঁর পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন। হিলারী ক্লিন্টন তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন এটা নিশ্চিত হলো যে আমরা বিভক্ত জাতি।

“আমরা দেখেছি আমরা যা ভেবেছিলাম তার চেয়ে এই জাতি কঠিনভাবে বিভক্ত। কিন্তু তবুও আমি এখনো বিশ্বাস করি এই আমেরিকাকে, যা আমি সর্বদাই বলে থাকি; তাই এই ফলাফল আমাদের মেনে নিতে হবে এবং ভবিষ্যতের জন্য কাজ করতে হবে”।

ক্লিন্টনের এই সমঝোতামূলক বক্তব্যের পর প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হোয়াইট হাউজ থেকে এক বিবৃতি দেন যাতে তিনি আমেরিকানদেরকে সকল বিভক্তি ভুলে দেশের পরবর্তী কমান্ডর ইন চীফ হিসাবে ট্রাম্পকে সহযোগিতা করার আহবান জানান।

“আমাদের প্রথম পরিচয় ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকান নয়। সবার আগে আমরা আমেরিকান। আমরা দেশপ্রেমিক। আমরা সবাই তাই চাই যা এই দেশের জন্য ভালো। আর সেটিই আমি শুনেছি মিষ্টার ট্রাম্পের গত রাতের বক্তব্যে। সেটিই তিনি বলেছেন যখন তার সঙ্গে আমার সরাসরি কথা হয়েছে এবং তাতে আমি উৎসাহিত হয়েছি”।

ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে দলমত নির্বিশেষে একযোগে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রকে সমৃদ্ধ করার ডাক দেন।

“যারা অতীতে আমার সমর্থন করেন নি; যদিও তারা সংখ্যায় কম; আমি আপনাদের পরামর্শ শোনার জন্যে আপনাদের কাছে আসবো এবং আপনাদের সহযোগিতা চাইবো যেনো একত্রে আমরা এই দেশকে সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে গড়ে তুলতে পারি”।

ট্রাম্প রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদের সমর্থন পাবেন যার স্পিকার হিসাবে আছেন রিপাবলিকান পল রায়ান। আর তাঁকে সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত রায়ান নিজেও।

“তিনি এমনভাবে মানুষের সঙ্গে মিশেছেন, যোগাযোগ গড়ে তুলেছেন যা আর কেউ পারেনি। রাজনীতিকে উল্টে দিয়েছেন তিনি এবং এখন একটি সমন্বিত রিপাবলিকান সরকারের নেতৃত্ব দেবেন”।

শ্বেতাঙ্গ শ্রমজীবি মানুষদের বিপুল ভোট পেয়েছেন ট্রাম্প। তারা দেশের অর্থনীতি নিয়ে হতাশ ছিলেন বলে একটি পরিবর্তন চেয়েছিলেন। যেমনটি বললেন ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের নির্বাচন বিশেষজ্ঞ নরম্যান আইসেন:

“২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব ছিল বহুদিন পর্যন্ত। আর তাতে অসন্তুষ্টু ছিলেন তারা। এর যে বিরূপ প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে পড়েছিল তার প্রতিক্রিয়া শ্রমজীবি শ্বেতাঙ্গ শ্রেনী দেখিয়েছে নির্বাচনে”।

নির্বাচনের আগে প্রায় সব জরিপেই হিলারী ক্লিন্টন সামান্য ব্যাবধানে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু তার পরও ফলাফল হয়েছে পরিবর্তিত। বললেন বিশ্লেষক মলি রেনল্ডস।

“জরিপের সময় সঠিক ভোটারদেরকে সঠিক প্রশ্ন করা হচ্ছে কিনা। তার প্রক্ষিতে কতো সঠিকভাবে ভোটাররা ভোট দিচ্ছে তা যাচাই হচ্ছে কিনা। আর নির্বাচনী জরিপের ডাটা যাচাই বাছাই করে তা সঠিকভাবে অনেক ক্ষেত্র ভবিষ্যদ্বানী করা হয়না। এ কারনেই জরিপের ফলাফলের সঙ্গে বাস্তবের মিল থাকেনা”।

নির্বাচনের ফলাফলের পর ক্লিন্টন রাজনীতির মঞ্চ থেকে সরে দাঁড়িয়ে ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়েছেন। আর এখন সকলেই আশা করছেন ট্রাম্প নজর দেবেন তার নতুন কার্যকরী সরকার গঠনের দিকে।

XS
SM
MD
LG