অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

‘গ্যাপ’কে ধিক্কার সূচক ‘এ্যাওয়ার্ড অব শেম’ প্রদান করেছে শ্রমিক সংগঠন


সম্প্রতি স্যান ফ্রান্সিসকোয় গ্যাপের সদরদপ্তরের সামনে ইন্টারন্যাশনাল লেবার রাইটস ফোরামসহ বেশকিছু সংগঠন গ্যাপের নানা ব্যার্থতা তুলে ধরে সমাবেশের আয়োজন করে। সেখানে গ্যাপের বার্ষিক বৈঠক চলছিল। এতে বাংলাদেশসহ গ্যাপের পোষাক সরবরাহকারী দেশসমুহের শ্রমিক অধিকার ও কারখানা নিরাপত্তা চুক্তিতে প্রতিষ্ঠানটি স্বাক্ষর না করায় নিন্দা প্রকাশ করা হয়। সমাবেশে অংশ নেয়া, ইন্টারন্যাশনাল লেবার রাইটস ফোরামের প্রতিনিধি সারা চার্চের সঙ্গে এ বিষয়ে টেলিফোনে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

গ্যাপের জন্য পোষাক প্রস্তুতকারী বাংলাদেশের একটি পোষাক কারখানায় অগ্নিকান্ডে নিহত, আহত ও ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকদের পরিবারের ক্ষতিপূরণ না দেয়া, সেখানকার অগ্নি ও ভবন নিরাপত্তা চুক্তি না করা এবং কম্বোডিয়ায় শ্রমিক অধিকারের প্রতি সম্মান না দেখানোর কারনে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ‘গ্যাপ’কে ধিক্কার সূচক ‘এ্যাওয়ার্ড অব শেম’ প্রদান করেছে বেশ কয়েকটি শ্রমিক অধিকার সংগঠন।

সমাবেশে ইন্টারন্যাশনাল লেবার রাইটস ফোরাম, জবস উইথ জাস্টিস সান ফ্রান্সসকো, সামঅবআস, ইউনাইটেড স্টুডেন্টস এ্যাগেইনস্ট সোয়েটশপস এবং স্থানীয় কিছু কর্মী অংশ নিয়ে গ্যাপের ব্যার্থতায় তাদেরকে পাবলিক আই এ্যাওয়ার্ড দেন। সমাবেশে ইন্টারন্যাশনাল লেবার রাইটস ফোরাম এর পক্ষে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধি সারাহ চার্চ টেলিফোনে জানালেন:

“কিছু সংগঠন এখানে একত্রিত হয়েছে গ্যাপের ন্যায় ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানসমূহকে আহবান জানাতে; চাপ দিতে; যে পোষাক কারখানায় অগ্নিকান্ডের মতো ভয়াবহ ঘটনার প্রেক্ষিতে তারা যেনো উপযুক্ত ব্যাবস্থা গ্রহন করে”।

২০১৩ সালের ৮ই অক্টোবর গ্যাপের জন্য পোষাক প্রস্তুতকারী বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান আসওয়াদ কম্পোজিট মিলে এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৭ জন শ্রমিক নিহত ও ৫০ জন আহত হন। কিন্তু গ্যাপের পক্ষ থেকে এক পয়সাও ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি। পরে পোষাক কারখানার অগ্নি ও ভবন নিরাপত্তা চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেনি। সমাবেশ থেকে গ্যাপের প্রতি আহাবান জানানো হয় অবিলম্বে তারা যেন তা করেন।

পোষাক শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা কি করছেন এমন প্রশ্নে সারাহ চার্চ বলেন;
“কিছু কোম্পানী বাংলাদেশ সেফটি এ্যকর্ডে স্বাক্ষর করেছে। যেমন এইচ এন্ড এম স্বাক্ষর করেছে ৫ বছরের ইন্ডিপেন্টেন্ট সেফটি ইনসপেকশনে। ওয়ালমার্ট চির্ড্রেন প্যালেস সহ অন্যান্যরাও এসব প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে”।

এর আগে ২৩শে জানুয়ারী সুইজারল্যান্ডের ডেভোসে নানা ব্যার্থতার কারনে গ্যাপের জন্য ধিক্কার সূচক এই পাবলিক আই জুরি এ্যাওয়ার্ড ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশের পোষাক শিল্পের ভবিষ্যৎ কি এমন প্রশ্নে সারা চার্চ বলেন যদি নিরাপত্তা চুক্তি ঠিকমত মানা হয় তবে ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল;
“আমি খুশী যে বাংলাদেশ সেফটি একর্ড, শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য আসলে কি কি করা দরকার সেসব তাদের কাছে জেনে শুনে করা হয়েছে। আর যদি তা ঠিকমত সকল কারখানায় মানা হয় তবে বাংলাদেশের পোষাক শিল্প মালিকদের জন্য যেমন লাভজনক হবে তেমনি শ্রমিক তথা পুরো বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য এই শিল্প বিশাল অবদান রাখবে”।

সমাবেশে বক্তারা কম্বোডিয়ায় সংগ্রামরত শ্রমিকদের দাবী পূরনে সহায়তার আহবান জানান। তারা গ্যাপকে বলেন তারা যেনো কম্বোডিয়ায় তাদের পোষাক সরবরাহকারীদেরকে শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরী মাসে অন্তত ১৬০ ডলার প্রদান করেন। এছাড়া কম্বোডিয়া সরকারের প্রতি জানুয়ারী থেকে বিনা বিচারে আটকে রাখা ২১ কর্মীকে মুক্তি দেয়ার আহবান জানান।
XS
SM
MD
LG