গিনিতে রবিবারের অভ্যুত্থানের পর, সামরিক বাহিনী দেশটির জাতীয় টেলিভিশনে ঘোষণা করে, তারা প্রেসিডেন্ট আলফা কন্ডে-কে গ্রেফতার করেছে, দেশের সংবিধান ভেঙে দিয়েছে এবং স্থল ও আকাশ সীমানা বন্ধ করে দিয়েছে।
পরে সামরিক জান্তা দেশব্যাপী কারফিউ জারী করে বলে এ এফ পি জানিয়েছে।
সামরিক বাহিনী দেশটি দখল করে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশিত এক ভিডিওচিত্রে, বিশেষ বাহিনীর সৈন্যদের দ্বারা আবৃত একটি কক্ষে প্রেসিডেন্ট কন্ডেকে দেখা যায় একটি সোফার উপর বসে একটি কুঁচকানো শার্ট এবং জিন্স পরা অবস্থায়। জান্তা পরে একটি বিবৃতি জারি করে বলে, ৮৩ বছর বয়সী কন্ডের কোনও ক্ষতি হয়নি এবং তিনি তার চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন।
অক্টোবরে, প্রেসিডেন্ট কন্ডে দেশটির সংবিধান সংশোধন করে, তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসেন। বিতর্কিত ঐ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে সহিংস বিক্ষোভের সূচনা হয়।
প্রাক্তন ফরাসি লেজিওনেয়ার ও গিনি সেনাবাহিনীর কর্নেল মামাদি ডুম্বুয়া জাতীয় টেলিভিশনে রবিবার গিনির পতাকা জড়িয়ে হাজির হন।
তিনি বলেন, "আমরা সরকার এবং সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলি ভেঙে দিয়েছি, আমরা আমাদের ভাইদেরকে জনগণের সাথে যোগ দিতে আহ্বান জানাচ্ছি।"
ডুম্বুয়া বর্তমান অবস্থার জন্য সরকারের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন। তিনি তার সৈন্যদলকে জাতীয় সমাবেশ ও উন্নয়ন কমিটি হিসেবে (সিএনআরডি) উল্লেখ করেন।
সিএনআরডি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ঘোষণা করে, সব গভর্নরকে সরিয়ে সেখানে সামরিক নেতাদের নিযুক্ত করা হয়েছে। তবে বিদায়ী মন্ত্রীদের সোমবার সংসদে একটি সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়।
দলটি এক বিবৃতিতে বলেছে, "কেউ উপস্থিত না থাকলে, সেটা সিএনআরডির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হিসেবে বিবেচিত হবে।"
কনক্রিতে এর আগে রবিবার গোলযোগের খবর পাওয়া যায়। কিন্তু টেলিভিশনে ঘোষণার পর, অনেকে অভ্যুত্থান সফল বিবেচনা করে তা উদযাপন করতে রাস্তায় নেমে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর রবিবার জারি করা একটি বিবৃতিতে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে, সতর্ক করে দিয়ে বলে, "সংবিধান বহির্ভূত যে কোন পদক্ষেপ গিনির শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির সম্ভাবনাকে বিনষ্ট করবে" এবং জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায়, যুক্তরাষ্ট্রসহ গিনির অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের "গিনিকে সমর্থন করার ক্ষমতা সীমিত করবে"।
পররাষ্ট্র দপ্তর সকল পক্ষকে "গিনির পূর্ণ সম্ভাবনা উপলব্ধি করার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পথকে এগিয়ে নিতে, স্থায়ী ও স্বচ্ছভাবে উদ্বেগ মোকাবেলায় জাতীয় সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে।"
আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলি গিনির অশান্তি-তে নিন্দা জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস টুইটারে লিখেছেন, "আমি বন্দুকের জোরে যেকোনো ক্ষমতা দখলের তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে প্রেসিডেন্ট আলফা কনডের মুক্তি দাবি করছি।"
আফ্রিকান ইউনিয়নের নেতারা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য জরুরীভাবে বৈঠকের জন্য সংস্থাটির শান্তি ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
(এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, রয়টার্স এবং এএফপি থেকে নেয়া)।