করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে কেন্দ্রের পরামর্শ মেনে পশ্চিমবঙ্গ সরকার আজ ঘোষণা করেছে যে, আগামীকাল বিকেল ৪টা থেকে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত কলকাতা ও সংলগ্ন পুর এলাকা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। ইংরেজিতে যাকে লকডাউন বলা হয়। শুধুমাত্র অত্যাবশ্যক পরিষেবা চালু থাকবে এবং নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান খোলা থাকবে। আজ সকালেই রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানান, আজ রাত বারোটা থেকে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত ভারতীয় রেলের যাত্রী পরিবহণ বন্ধ থাকবে। কোনও দূরপাল্লার বা মাঝারি পাল্লার ট্রেন চলবে না, বন্ধ থাকবে সব লোকাল ট্রেন আর মেট্রো রেলও। অত্যাবশ্যক পণ্য চলাচলের জন্য কেবলমাত্র মালগাড়ি চলবে। সেই সঙ্গে আন্তঃরাজ্য বাস পরিবহনও বন্ধ রাখা হবে। আগামী ৩১শে মার্চ পর্যন্ত এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে কোনও বাস চলবে না।
এর আগেই ভারত সরকার ঘোষণা করেছিল যে, আজ রবিবার মধ্যরাত থেকে দেশের কোথাও কোনও আন্তর্জাতিক উড়ান নামতে পারবে না। তার আগে আজ সকালেই ইতালির রোম থেকে ২৩৬ জন ভারতীয়কে নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ বিমান দিল্লিতে নেমেছে। আগত সকলকেই দু'সপ্তাহের জন্য কোয়ারান্টাইনে রাখা হবে। আপাতত দেশের মধ্যে বিমান চলাচল বন্ধ করা হচ্ছে না। তবে বিমানে যাত্রী নিতান্তই কম।
ভারতে আজ করোনা ভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিনশো ছুঁতে চলেছে আর মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আবেদনে সাড়া দিয়ে আজ রবিবার সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সারা দেশে জনতা কার্ফু অর্থাৎ স্বেচ্ছায় গৃহে বন্দি থাকার অভ্যাস পালন করা হচ্ছে। কার্ফু চলাকালীনই প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছিলেন বিকেল ৫টার সময় সকলে যেন শাঁখ আর কাঁসর ঘন্টা বাজিয়ে, তা না পারলে হাততালি দিয়ে সকলকে উৎসাহ যোগান। দেশবাসী সেই অনুরোধ রেখেছে। আমি যখন এই খবর পড়েছি, ঠিক সেই সময়, বিকেল ৫টায় কলকাতায় আমার সমস্ত পাড়া জুড়ে শুনছি শঙ্খ ধ্বণি, কাঁসর ঘন্টার আওয়াজ আর সমবেত হাততালি। করোনার সঙ্গে লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।