আজ বুধবার থেকে কলকাতায় সীমিত সংখ্যায় বাস চালু হয়ে গেল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন, ২৭ মে থেকে যতটা পারা যায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেছিলেন, বেশ কিছু অফিস, দোকানপাট এবং অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে। যদিও তাতে কর্মীসংখ্যা থাকবে ৫০% এর মতো। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে কর্মীদের অফিসে আসতে বলা হবে এবং করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যে সমস্ত বিধি নিয়ম রয়েছে সেগুলি সব মেনে স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী সকলকে হাজিরা দিতে হবে। কিন্তু একটা অসুবিধা থেকে গিয়েছিলো, কর্মীরা তাঁদের কর্মস্থলে যাবেন কী করে। সেই জন্যেই আজ থেকে সরকারি বাস চলা শুরু হয়েছে সীমিত সংখ্যায়।
আপাতত চল্লিশটি রুটে কলকাতায় বাস চালানো হচ্ছে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। প্রত্যেকটি রুট ঠিক করা হয়েছে সবচেয়ে বেশি দরকারি জায়গাগুলোতে যাতে লোকে যেতে পারে সেই কথা ভেবে। অর্থাৎ অফিস-আদালত, হাসপাতাল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ইত্যাদি। সিনেমা, থিয়েটার, রেস্তোরাঁ, ক্লাব, জিম, এগুলো ছাড়া মোটামুটিভাবে যেগুলো আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোই এখন খুলে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকলকে চলতে বলা হয়েছে। বাসের চালক এবং কন্ডাকটরদের সবাইকে পিপিই অর্থাৎ ভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য যে আপাদমস্তক ঢাকা পোশাক পরতে হয়, সেই পোশাক দেওয়া হচ্ছে, হাত ঢাকার জন্য গ্লাভস দেওয়া হচ্ছে এবং যাত্রীদের বলা হয়েছে মাস্ক ছাড়া কেউ যেন বাসে না ওঠেন। ইতিমধ্যে সীমিত সংখ্যক ট্যাক্সি চলাচলও শুরু হয়েছে। তবে বেসরকারি বাস এখনও চালানো শুরু হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন সংস্থার জন্য আজ থেকে আগামী কয়েকদিনের এই পরিষেবা পুরোদমে বাস চালানোর একটা রিহার্সাল বলা যেতে পারে। কারণ পয়লা জুন থেকে কলকাতায় মোটামুটিভাবে বাস চলাচল যতটা পারা যায় স্বাভাবিক করার চেষ্টা হবে। লকডাউনও সেদিন থেকে খুলে যাচ্ছে। সেই কথা চিন্তা করে এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে কোন কোন রুটে সবচেয়ে বেশি বাস দরকার, সেখানে যাতে ঠিকমতো বাস পাওয়া যায়, লোকের অসুবিধে না হয়। ওদিকে কলকাতা ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের বাকি জায়গাগুলোতে সাড়ে সাতশো বাস আজ থেকে চলা শুরু করেছে ভোর পাঁচটা থেকে সাতটা পর্যন্ত। বেসরকারি বাস গুলো যদি পরবর্তীকালে এর সঙ্গে যোগ দেয় তা হলে অবস্থা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো জুন মাসে অন্তত খুলছে না, সুতরাং যাত্রীর চাপ এখন কিছুটা কম থাকবে বলেই অনুমান।
দীপংকর চক্রবর্তী, ভয়েস অফ আমেরিকা, কলকাতা