অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে নিকি হেইলির সাক্ষাৎকার


উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে যে সম্প্রতি এক ধরণের বোঝাপড়া হয়েছে এবং তারা যে একই পতাকাতলে মিলিত হচ্ছে সেই সম্পর্কে ভ্যান সাস্টের্নকে দেয়া এই সাক্ষাৎকারে নিকি হেইলি বলেন যে এটা একটা ভালো লক্ষণ যে উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া পরস্পরের সঙ্গে কথা বলছে। তবে আমাদের এ নিয়ে বিভ্রান্ত হবার কোন কারণ নেই যে তারা অলিম্পিক্স নিয়ে কথা বলেছে বলেই এবং এতে উত্তর কোরিয়া যোগ দেবে বলেই এর মানে এ নয় যে উত্তর কোরিয়ার দিক থেকে বিপদের কোন আশংকা নেই । যে পর্যন্ত না তারা ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ করছে , যে পর্যন্ত না তারা আসলেই এটা দেখাতে পারে যে তারা পরমাণু অস্ত্র মুক্ত হতে ইচ্ছুক সে পর্যন্ত আমাদের খুব সতর্ক থাকতে হবে। তারা আগেও কথা বলেছে। আমাদের এখন এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে যে তারা কতটুকু কি বাস্তবায়িত করছে আর এ ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন মানে হচ্ছে তারা বর্তমানে যে পারমানিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তা পুরোপুরি বন্ধ করা।

ভ্যান সাস্টের্ন পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সম্পর্কে প্রশ্ন জিজ্ঞেষ প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বছরের প্রথম দিনেই একটা কড়া টুইট বার্তা পাঠিয়েছেন এবং নিকি হেইলি ও পাকিস্তান সম্পর্কে কড়া কথা বলেছেন, বলেছেন সাহায্য কমিয়ে দেওয়ার কথা।

সে সম্পর্কে নিকি হেইলি ভয়েস অফ আমেরকাকে বলেন:

আসলে, আফগানিস্তানের সঙ্গে আমাদের সব ক’টি বৈঠকেই একটা জিনিষই বেরিয়ে এসছে যে যতবার আফগানিস্তান সঠিক পথে যাওয়া শুরু করেছে, ততবারই পাকিস্তান তাদের পিছিয়ে নিয়েছে কারণ পাকিস্তান সন্ত্রাসীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করছে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে আফগানিস্তানকে

নিরাপদ এবং স্থিতিশীল দেখার এক মাত্র উপায় হচ্ছে যদি আমরা সেই হুমকি নির্মূল করতে পারি । আমরা এ ব্যাপারে মুখ ঘুরিয়ে রাখতে পারি না , পাকিস্তানকে সামরিক সাহায্য বাবদ কোটি টাকা আমরা দেবো আর তারা সন্ত্রাসী পুষবে যারা আমাদেরই সৈন্যদের গুলি করে মারবে সেটা হতে পারে না। আমরা সেটা হতে দিতে পারি না। কাজেই সামরিক সাহায্য কমানোর মানে হচ্ছে তাদেরকে এই বার্তা দেওয়া। আশা করি তারা আলোচনায় বসবে এবং উপলব্ধি করতে যে তাদেরকে এ ব্যাপারটা বন্ধ করতে হবে। এটা শুদুমাত্র আফগানিস্তানের ব্যাপার নয়, এটা ঐ অঞ্চলের ব্যাপারই শুধু নয় । এটা গোটা বিশ্বের ব্যাপার।

বর্তমান বিশ্বের আরেকটি বহুল আলোচিত –সমালোচিত সমস্যা হচ্ছে মিয়ান্মারের রোহিঙ্গা সংকট । এ প্রসঙ্গে ভ্যান সাস্টার্ন স্মরণ করিয়ে দেন যে ২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মিয়ান্মারের উপর থেকে আংশিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন এবং আশা ছিল যে দেশটি গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাবে এবং তারা আওন সান সুচিকে তাদের নেত্রী হিসেবে নির্বাচিত ও করে। কিন্তু আগস্ট মাস থেকে আমরা এখন এমন পরিস্থিতির মুখে রয়েছি যেখানে লক্ষ লক্ষ লোককে মিয়ান্মারের সামরিক বাহিনী বাংলাদেশে তাড়িয়ে দিয়েছে । সেখানে মারাত্মক এক মানবিক দুর্যোগের সৃষ্টি হয়েছে । এখন তারা বাংলাদেশে শরনার্থি শিবিরে রয়েছে। এই মানবিক সংকট নিরসনে জাতিসংঘ কিংবা যুক্তরাষ্ট্র কি আদৌ কিছু করবে, করলে ঠিক কি করতে পারে ?

এই প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত নিকি হেইলি বলেন :

এটা অন্যতম এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি। বর্মায় যে পুরোদমে জাতিগোষ্ঠিগত নিধন চলছে সেটা সাংঘাতিক। তা ছাড়া এই যে ঘটনা যে তাদেরকে সামরিক বাহিনী বিতাড়িত করেছে , তাদের সঙ্গে আমানবিক আচরণ করেছে , শিশুদের আগুনে নিক্ষেপ করেছে , নারীদের ধর্ষণ করেছে, এ সব ঘটনার কারণেই তো বাংলাদেশে এই শরনার্থিরা গেছে।

তিনি বলেন জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে কাজ করেছি বিশেষ দূত পাঠাবেন বাংলাদেশে ও বর্মায়, পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখার জন্য আমরা ও সামরিক বাহিনীর ওপর চাপ দিয়েছি। তবে আমার মনে হয় না কাঙ্খিত পরিবর্তন হচ্ছে। তবে বর্মায় যা হচ্ছে সে ব্যাপারে আমরা সেখানকার সরকার কিংবা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে খুব নরম আচরণ করতে পারিনা। তারা যা করেছে তার জন্যে তাদের জবাবদিহি করতে হবে। শরনার্থীরা দেশে ফিরে যেতে অত্যন্ত ভয় পাচ্ছে কাজেই প্রত্যাবাসন খুব সহজ নয়। আমাদেরকে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে ।

গ্রেটা ভ্যান সাস্টের্নকে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রদূত হেইলি জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধ করাসহ আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করেন।

please wait

No media source currently available

0:00 0:07:23 0:00

XS
SM
MD
LG