অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বার্মার নির্বাচন শাসকগোষ্ঠীর জন্য বড় পরীক্ষা-যুক্তরাষ্ট্র- ভয়েস অফ এ্যামেরিকার সম্পাদকীয়


বার্মার মানুষ আট নভেম্বর নির্বাচনের অংশ নিতে যাচ্ছে। এক হাজার একশো ৭১ সংসদীয় আসনের জন্য লড়ছেন ছয় হাজারের বেশী প্রার্থী। আর এ নির্বাচন হচ্ছে-চার বছর আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন ও শাসকগোষ্ঠীর দ্বারা শুরু হওয়া সংস্কার প্রক্রিয়ার সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।

নির্বাচনী প্রচারনা গত আট সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় এবং প্রথমবারের মত, কে জিতবে তা কেউ জানে না। কারন এই নির্বাচনটি ১৯৯০ সালের সবশেষ প্রকাশ্যে-প্রতিযোগিতামূলক সাধারণ নির্বাচন থেকে একেবারেই আলাদা। ঐ নির্বাচনে বিরোধী ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিল। কিন্তু ঐ ফলাফল ক্ষমতায় থাকা সরকারের কাছ থেকে কখনো স্বীকৃতি পায়নি।

এরপরও সমস্যা আছে। প্রথমত যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিষয়ক সহকারী সচিব ড্যানিয়েল রাসেল এর মতে, “আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি যে বার্মার রাজনৈতিক মাঠ সমান নয়। পদ্ধতির মধ্যে বেশ কিছু বাধা রয়েছে, যা সত্যিকারের গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রতিরোধ করছে। যেমন-বার্মিজ সংবিধানে ২৫ শতাংশ সংসদীয় আসন এবং মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ন পদ সেনাবাহিনীর জন্য সংরক্ষিত।“

সাংবিধানিক বিধিনিষেধের কারনে সবচেয়ে প্রভাবশালী বিরোধী রাজনীতিবিদ অং সান সু চি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দীতা করতে পারেননি। এবং আইনে বিধিনিষেদ ও বৈষম্যের কারনে কিছু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বা ধর্মীয় গ্রুপ, প্রার্থী বা ভোটার হতে পারেনি। বার্মায় সাম্প্রতিক সফরে যুক্তরাষ্ট্রের উপ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বেন রোডস উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, নির্বাচনের সময় ধর্মকে বিভাজনের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হতে পারে। রেঙ্গুনে সংবাদ মাধ্যমকে রোডস বলেন, “আমরা সংবিধানের সঙ্গে ধর্মীয় অসঙ্গতিপূর্ন মত প্রকাশের ক্ষেত্রে ঝুঁকি দেখতে পাচ্ছি। যা ধর্ম ও রাজনীতিকে আলাদা করছে। এবং যখন এটা ঘটে অবশ্যই তা শেষ পর্যন্ত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য বিপদের কারন হয়ে উঠে।‍”

এই নির্বাচন বার্মার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী সচিব ড্যানিয়েল রাসেল বলেন, “নির্বাচন পরিচালনা এবং ফলাফল মৌলিক ভাবে ২০১৬ সালে বার্মিজ সরকারের সঙ্গে আমাদের চুক্তির আকৃতি ঠিক করবে। নতুন বার্মিজ সরকারকে সহায়তা করার জন্য আমাদের সক্ষমতা ও নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা নির্ভর করছে সার্বিক প্রক্রিয়ার সম্পূর্ন মূল্যায়নের ওপর।”

এখন পর্যন্ত বার্মিজ সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে প্রশাসনকে উন্নত করতে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে। আর বার্মিজ সরকারের সে চেষ্টাকে আরো গতিশীল করতে নির্বাচন পরিচালনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ১কোটি ৮০ লাখ ডলারের বেশী আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।

সহকারী সচিব ড্যানিয়েল রাসেল বলেন, ২০১৫ সালের নির্বাচন স্বৈরতান্ত্রিক বার্মার রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ন মাইলফলক। কিন্তু আরো বেশি কঠিন হবে-- পরবর্তী সরকারকে রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে সফলতা অর্জনে মনোযোগী হওয়া এবং অন্যান্য পুর্নগঠনের জন্য অনাবরত চাপ দেয়া। তিনি বলেন, “এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বার্মার সরকার ও মানুষ, গনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো গঠন এবং প্রক্রিয়ার প্রতি তাদের অঙ্গীকার প্রদর্শনের সুযোগ পাচ্ছে। যদি নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য হয়, তাহলে তারা তাৎপর্যপূর্ন একটি পদক্ষেপ সামনে রাখতে পারবে।”

ভয়েস অফ এ্যামেরিকার সম্পাদকীয়। এতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন রয়েছে।

please wait

No media source currently available

0:00 0:03:37 0:00

XS
SM
MD
LG