অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

উত্তর কোরিয়া আজ রবিবার দূর পাল্লার একটা রকেট উৎক্ষেপন করেছে-


উত্তর কোরিয়া আজ রবিবার দূর পাল্লার একটা রকেট উৎক্ষেপন করেছে- যাতে করে একটা উপগ্রহ বহন করা হয়েছে বলে বলা হচ্ছে-এবং ব্যালাস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র প্রযুক্তি ব্যবহার না করবার কথা বলে জাতিসংঘের যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তার ওপরে, সে নিষেধাজ্ঞার কোনো রকম পরোয়া উত্তর কোরিয়া করেনি।

আজ ভোরে, চীন সীমান্ত সংলগ্ন উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে উত্তর কোরিয়ার যে তংচ্যাং-রি উপগ্রহ উৎক্ষেপন মঞ্চ রয়েছে এ রকেট সেই, সেখান থেকেই উৎক্ষেপন করা হয়।রকেটটি দক্ষিনমুখো হয়ে জাপানের দক্ষিনাঞ্চলবর্তী ওকিনাওয়া দ্বীপপুঞ্জের ওপর দিয়ে বঙ্কিম-ক্ষেপনাস্ত্র পথ দিয়ে ধেয়ে গিয়েছে।উৎক্ষেপন পর্ব সফলভাবে সম্পন্ন হয় বলে বলা হচ্ছে।

এ উৎক্ষেপনের খবর নিশ্চিত করে পরবর্তীতে উত্তর কোরিয়া তার সরকারী বার্তা সংস্থা KCNA মারফত একটা বয়ান জারি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্র্যাটেজিক কমান্ড সূত্রে এ ক্ষেপনাস্ত্র মহাকাশ মন্ডলে প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় এবং উৎক্ষেপন পর্ব সাফল্যজনকভাবে সম্পন্ন হয়েছে যে তারও উল্লেখ করা হয়।দক্ষিন কোরিয়ার ইয়োনহ্যাপ বার্তা সংস্থা যদিও এর আগে খবর দিয়েছিলো এই বলে যে রকেটটি কক্ষপথে পৌঁছুতে ব্যর্থ হয়েছে এবং সেটি দক্ষিন কোরিয়ার অন্তর্গত জেতু দ্বীপপুঞ্জের অদূরে সাগরবক্ষে গিয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিলো।

উত্তর কোরিয়ার ঐ রকেট নিশানা করে তাকে ভূপাতিত করবার কোনো পদক্ষেপ জাপান নেয়নি বলে বলা হ’চ্ছে- যদিও এর আগে তারা এমোনটিই বলে হূঁশিয়ারী দিয়েছিলো এবং সেইমতো তার ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরক্ষা য়ুনিটগুলোকেও সতর্কাবস্থা বহাল রেখেছিলো।

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা কতৃপক্ষ রকেটের ঐ বঙ্কিম পথের দিকে লক্ষ রেখেছিলো ঠিকই- তবে ঐ রকেট যুক্তরাষ্ট্র বা তার মিত্র পক্ষিয়দের জন্যে কোনো হূমকি রুপে প্রতিভাত হয়নি।

দু’ হাজার বারো সালেও উত্তর কোরিয়া সাফল্যজনকাভাবেই তিন স্তরের একটি রকেট উৎক্ষেপন করেছিলো কক্ষপথে একটি উপগ্রহ প্রতিস্থাপনের লক্ষে।

পিয়ংইয়াং বলছে- এ রকেট উৎক্ষেপন ছিলো একটি শান্তিপুর্ণ মহাকাশ কর্মসূচী কক্ষপথে ভূ-পর্যবেক্ষন উপগ্রহ পৌঁছে দেওয়া ছিলো যার লক্ষ। তবে উত্তর কোরিয়ার এহেন মহাকাশ কর্মসূচীকে ব্যাপক বিস্তৃতভাবে ধিক্কৃত করা হয়েছে – পারমানবিক ও ব্যালাস্টিক প্রযুক্তির অগ্রগতি সাধনই তার এ আগ্রাসী অভিপ্রায়ের লক্ষ বলে অভিহিত করে- জাতিসংঘের প্রস্তাবাবলিতে যা কিনা নিষিদ্ধ করা রয়েছে।

দক্ষিন কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিন কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন বিষয়ে আলোচনা শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।দক্ষিন কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তা রিয়ু জে-সিয়ুং এ মন্তব্য করেছেন দক্ষিন কোরিয়ায় মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের অস্টম সেনা দলের সেনাধিনায়ক টমাস ভান্ডালের সঙ্গে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে।

যুক্তরাষ্ট্র,জাপান ও দক্ষিন কোরিয়ার অনুরোধক্রমে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ আজ রবিবারেই উত্তর কোরিয়ার রকেট উৎক্ষেপন বিষয়ে আলোচনার জন্যে বৈঠকে বসবে।জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মূন বলেছেন-উত্তর কোরিয়া এই যে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লংঘন করে ব্যালাস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র প্রযুক্তি ব্যবহারের সাহায্য নিয়ে উক্ষক্ষেপনের এ উদ্যোগ নিলো এটা নিতান্তই পরিতাপের বিষয়- ধিক্কার যোগ্য উদক্ষেপ।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরী পিয়ংইয়াংয়ের এ উদ্যোগ জাতিসংঘ প্রস্তাবের উদগ্র লংঘন বলে মন্তব্য করেছেন।

এ ব্যাপারে ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহনের আহ্বান জানিয়েছেন দক্ষিন কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গিউন হী।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে উত্তর কোরিয়ার এ উৎক্ষেপন উদ্যোগে ধিক্কার জানিয়েছেন। চীনের শিন হূয়া বার্তা সংস্থা উত্তর কোরিয়ার এ রকেট উৎক্ষেপন কোরিয় উপদ্বীপের উত্তেজনা পরিস্থিতিকে আরো প্রকট করে তুলবে বলে আশংকা ব্যক্ত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রপক্ষিয়রা উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ আরোপের আহ্বান জানাচ্ছে।

XS
SM
MD
LG