অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

অপশনাল প্রোটোকল: মানবাধিকার সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ন আন্তর্জাতিক আইন


গত ৫ দশকে ১৬১টি দেশ জাতিসংঘের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। ফলে অনেক আঞ্চলিক ফোরাম এবং জাতীয় আদালত এসব অধিকার সংরক্ষণের আইণ ব্যবহার করছে। এর মধ্যে রয়েছে কাজের অধিকার, ন্যুনতম শিক্ষার অধিকার,খাদ্য, আশ্রয় ও স্বাস্থ্য সেবা অধিকার। মানবাধিকার কর্মীরা ঐ চুক্তির পাশাপাশি একটি পাশ্বর্চুক্তিতে স্বাক্ষরের আহবান জানিয়েছেন। উইলিয়াম ইগল এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেন। শোনাচ্ছেন সেলিম হোসেন:

অধিকাংশ সময় অভিযোগ নিষ্পত্তি হয় জাতীয় আদালতে। তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে, ‘অপশনাল প্রোটোকল টু দা কভেন্যান্ট’ নামক নতুন প্রক্রিয়া, ব্যাক্তি বিশেষকে জেনেভায় চূক্তি কমিটির কাছে দরখাস্ত করার সুযোগ দেবে। ১৮ সদস্যের এই স্বাধীন প্যানেল দা ইউএন কমিটি অন একোনোমিক সোশ্যাল এ্যান্ড কালচারাল রাইটস নামে পরিচিত।

অদিন্দো ওপিয়াতা নাইরোবির একোনোমিক এ্যান্ড সোশ্যাল রাইটস সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক। তিনি বললেন, “অপশোনাল প্রোটোকল সেইসব ব্যাক্তিবিশেষের জন্য গুরুত্বপূর্ন বিকল্প যারা মনে করেন তাদের নিরাপত্তার যথেষ্ঠ অভাব আছে। কিছু আফ্রিকান দেশে এখন সংসদীয় অনুমোদন রয়েছে স্থানীয় ট্রাইব্যুনালের কাছ থেকে এইসব অধিকারের অনেকগুলোর শ্চিয়তা পাবার। তবে এখনো এসব অধিকার সম্পূর্ণভাবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু ফারাক রয়ে গেছে”।

তিনি বলেন ধরা যাক একজন দরিদ্র লোক গৃহ, স্বাস্থ্য সেবা, পানি ও নিস্কাশন নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ করে জাতীয় আদালতে দরখাস্ত করলো। সেই ক্ষেত্রে স্থাণীয় আদালত সব সময়ই যে তার গুরুত্ব দেয় তা নয়। অপশনাল প্রোটোকল এক্ষত্রে ঐ ব্যাক্তি বিশেষকে তার অভিযোগের গুরুত্ব পেতে সহায়তা করে।

ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্টের লীগ্যাল এ্যান্ড পলিসি ডিরেক্টর ইয়ান সিইডারম্যান। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী একজন ব্যাক্তি স্থানীয় আদালতে অ।ভিযোগেরজবাব না পেলে এক বছরের মধ্যে এই চুক্তি কমিটির কাছে দরখাস্ত করতে পারেন।

“যদি তাদের মতামতের কোন লংঘন ঘটে, তারা এর পক্ষে বৃহৎ সমাধানের জন্য বলতে পারেন”।

সিইডারম্যানের মতে কমিটির অনুসন্ধানে প্রাপ্ত ফলাফল সবাইকে আইনগতভাবে অনুসরণ করতে হবে তেমন নয়, তবে যেসব দেশ এই অপশনাল প্রোটোকলে স্বাক্ষর করেছেন তারা তা গুরুত্ব সহকারেই নেবেন। যারা এই প্রোটোকলের স্বাক্ষরকারী, তারা কমিটির প্রস্তাব এবং শুপারিশ মানতে আইনগতভাবে বাধ্য।

এর সমর্থকরা বলছেন এই চুক্তি এবং প্রোপেটাকল ব্যাক্তিবিশেষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নের জন্য সহায়ক হবে; বিশেষ করে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আইন লংঘনের কারনে যারা জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করতে পারছেন না তাদের ক্ষেত্রে। উদাহরণস্বরূপ ২০০৯ সালে আফ্রিকান কমিশন অন হিউম্যান এ্যান্ড পিপলস রাইটস বলেছে দারফুর, সুদান থেকে বহিস্কার ছিল গৃহায়নসহ নানা ধরনের মানবাধিকার লংঘন।

কিছু সমালোচক বলছেন ঐ চুক্তি এবং প্রোটোকল সরকার এবং আইন প্রনেতাদের নীতিমালায় হস্তক্ষেপ করবে। তবে সমর্থকরা বলছেন চুক্তির প্যানেলিষ্টরা লক্ষ রাখকবন সরকারসমূহ ঠিকমত আইনকানুন মানছেন কিনা। সিউডারম্যান বলেন,

“দরিদ্র দেশসমুহের জন্য এর মানে হচ্ছে চুক্তির নীতিমালার সকল অধিকার সঠিকভাবে মানা, যদিও অনেকেরই তা বুঝতেই সময় লাগবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিকারের ন্যায় অনেকগুলো নীতিমালা সহজ এবং সবাই তা মানবে”।

অপশোনাল প্রোটোকল গত বছর ১১টি দেশের অনুমোদনের পর শুরু হয়। এরা ছিল আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, বসনিয়া-হারজেগোভিনা, একুয়েডর, এল সালভাদর, মঙ্গোলিযা, মন্টেনেগ্রো, পর্তুগাল, স্লোভাকিয়া, স্পেইন এবং উরুগুয়ে।

তবে কিছু আফ্রিকান দেশ ঐ ৪৫টি দেশের মধ্যে যারা অপশোনাল প্রোটোকলে স্বাক্ষর করেছে যাতে অনুমোদন করেছে বুরকিনা ফাসো, কেপ ভার্দে, দ্ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অক দা কঙ্গো, দা রিপাবলিক অব দা কঙ্গো, গ্যাবোন, ঘানা, গুইনিয়া বিসাও, মাদাগাস্কার,মালি, সেনেগাল এবং টোগো।

যেসব আফ্রিকান দেশ একোনোমিক সোশ্যাল ও কালচারাল রাইটসেস্বাক্ষর করেনি তারা হচ্ছে বতসোয়ানা, কমোরোস, মোজাম্বিক, সাও তাও এবং প্রিন্সিপে এ্যান্ড সাউথ আফ্রিকা।

সমর্থকরা বলেন প্রোটোকলের অভিযোগ প্রক্রিয়া ব্যাক্তিবিশেষকে ক্ষমতায়ন করে এবং তা ন্যায়বিচারের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এ পর্যন্ত কেউই কমিটিতে অভিযোগ দাখিল করেনি।
XS
SM
MD
LG