বিশ্বের শরণার্থী সমস্যা নিয়ে নতুন এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, উদ্বাস্তু শিবিরগুলোয় জ্বালানী সরবরাহের বর্তমান পদ্ধতি যদি সম্পূর্ণ পরিবর্তন করা হয়, তা হলে হাজার হাজার মানুষের জীবন রক্ষা করা যাবে। লক্ষ লক্ষ ডলার বাঁচানো যেতে পারে।
এ সম্পর্কে লণ্ডন থেকে হেনরী রিজওয়েলের প্রতিবেদন বিস্তারিত শোনাচ্ছেন – রোকেয়া হায়দার ও সরকার কবীরুদ্দীন।
বর্তমানে বিশ্ব জুড়ে শরণার্থীদের সংখ্যা যে হারে বাড়েছে, এই পর্য্যায়ে আগে আর কখনও ছিল না। জাতিসংঘের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৫ কোটি ৯৫ লক্ষ মানুষ তাদের ঘরবাড়ী ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে।
উদ্বাস্তু শিবিরগুলোয় স্থান সংকুলান হচ্ছে না, শিবিরগুলোর রক্ষণাবেক্ষণও কঠিন হয়ে পড়ছে। অর্থ, প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র সবকিছুরই অভাব।
কয়েকটি মানবিক সহায়তা সংগঠনের সমন্বয়ে নবগঠিত মুভিং এনার্জি ইনিশিয়েটিভ গ্রুপ – উদ্বাস্তু শিবিরে যে ভাবে বিদ্যুৎ- জ্বালানী ব্যবহার করা হয় তা পরিবর্তনের কথা বলছে। বৃটিশ পলিসি গ্রুপ চ্যাথাম হাউসের কর্মকর্তা গ্লাডা লান বলেন, ‘আমরা মনে করি যে, এইসব অসহায় মানুষের জীবন এবং তাদের জীবনযায্রার মান উন্নত করার বিরাট সুযোগ রয়েছে। সেইসঙ্গে আগামীতে যথেষ্ট টাকাপয়সা বাঁচানো যেতে পারে’।
সিরিয়া সীমান্তের কাছে জর্ডান যাতারি শিবিরে সম্প্রতি যে বিদ্যূৎ বিল এসেছে তা হলো ৮৭ লক্ষ ডলার। যার ফলে জাতিসংঘকে জ্বালানী সরবরাহের উন্নত ব্যবস্থার খরচ ছাঁটাই করতে হয়েছে। এবং শিবিরের ৯০ শতাংশ মানুষের জন্য বিদ্যূৎ সরবরাহ নেই। ৮০ শতাংশ মানুষ রান্নার জন্য কাঠ ব্যবহার করে। লান বলেন,
‘যেমন ধরুন, আমরা একটা হিসাব করে দেখেছি যে, রান্নার জন্য আরও ভাল উনুন এবং সৌরশক্তি চালিত লণ্ঠন ব্যবহার করলে বছরে ৩ কোটি ২৩ লক্ষ ডলার বাঁচানো যাবে। এভাবে দ্রুত প্রাথমিক বিনিয়োগের ফলাফল পাওয়া যবে। এর চাইতে আরও ভাল ব্যবস্থাও আছে, যেমন সৌরশক্তি ব্যবহার অন্যান্য পুনর-ব্যবহারযোগ্য জ্বালানী ব্যবহার সবকিছুই করা যেতে পারে’।
গবেষকরা বলছেন, প্রতি বছর শিবিরের ভিতরে রান্নার ফলে বায়ূদূষণে আনুমানিক ২০ হাজার উদ্বাস্তু মারা যায়। আবার জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করাটাও, বিশেষ করে মহিলাদের জন্য, এটা খুবই বিপজ্জনক কাজ। লান বলেন, মহিলারা রাতে যখন কোন আলো থাকে না অন্ধকারে তারা বাইরে যেতে চায় না। যদি যেতে হয় তা হলে কোন দূর্ঘটনা বা হামলার আশংকা থাকে। কাঠ খুঁজতে গিয়ে অন্ধকারে কম বয়সী মেয়ে বা মহিলাদের ধর্ষণের বা অন্য ধরণের হামলার ঝুঁকির কথা প্রায়ই শোনা যায়।
লান বলেন তবে বেশীরভাগ দেশ যারা উদ্বাস্তুদের থাকার ব্যবৃতা করে তারা কিন্তু স্থায়ীভাবে তাদের বসবাসের ব্যবস্থা করতে চায় না। গবেষকরা বলছেন, পরিবেশ বান্ধব সবুজ প্রযুক্তি ব্যবহার করলে জীবন রক্ষা করা যাবে সেই সঙ্গে পৃথিবীর রক্ষাও সম্ভব হবে।