অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

দীর্ঘ দ্বন্দ্বের মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করা সমীচীন নয়-প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প


বুধবার ভোরে উত্তর সিরিয়ার সীমান্তবর্তী গ্রামাঞ্চলে হামলা চালিয়েছে তুরস্ক এবং তুরস্ক সমর্থিত সিরিয়ার মিলিশিয়া। এই হামলায় নিহত হয়েছে বহু অসামরিক মানুষ।ভয়েস অফ আমেরিকার সংবাদদাতার প্রতিবেদন পড়ে শোনাচ্ছি। আমার সঙ্গে রয়েছেন সেলিম হোসেন।

যুক্তরাষ্ট্র তার সৈন্যদল উত্তর সিরিয়া থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার পর পরই, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তায়িপ এরদোয়ান সিরিয়াতে কুর্দি দখলকৃত অঞ্চলে আক্রমণ চালানোর ঘোষণা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনালড ট্রাম্পের সিরিয়া থেকে সৈন্যদল প্রত্যাহার সিধান্তকে মিত্রদের সঙ্গে বিসাশঘতকতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদিও সিরিয়াতে তুরস্কের হামলার নিন্দা করছেন কিন্তু তিনি এও বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এর মধ্যে থাকা উচিৎ নয় কেননা তুরস্ক এবং কুর্দিদের মধ্যকার এই দ্বন্দ্ব শতবর্ষের।

তুরস্কের এই হামলা ছিল প্রত্যাশিত যেহেতু প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বারংবার বলেছেন সীমান্ত থেকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি বাহিনীকে বিতাড়িত করবেন তিনি।

ট্রাম্প বুধবার আঙ্কারাকে হুশিয়ার করে বলেন, তিনি তুরস্কের অর্থনীতিকে সমূলে শেষ করে দেবেন যদি তাদের বাহিনী সাধারণ মানুষ এবং সংখ্যালঘুদের কোনও ধরণের ক্ষতি করে। তবে তিনি বলেন, তুরস্ক এবং কুর্দিদের মধ্যকার এই দীর্ঘ দ্বন্দ্বের মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করা সমীচীন নয়।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, কয়েক দশক ধরে তাদের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব চলছে। হামলা পাল্টা হামলা চলছে। আমাদের এই সংঘাতের মধ্যে নিক্ষেপ করা হয়েছে। কথা ছিল সেখানে আমরা ৩০ দিন থাকব কিন্তু আমরা সেখানে বছরের পর বছর কাটিয়েছি।

ওদিকে বুধবারের হামলা সম্পর্কে খবর পাওয়া গেছে যে সেখানে বহু অসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে এক খ্রিস্টান দম্পতি ও শিশু রয়েছে।

সিরিয়ান ডেমোক্র্যাট বাহিনীর মুখপাত্র ভয়েস অফ আমেরিকার কুর্দি বিভাগকে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য ছাড়াই তারা লড়াই করবেন।

মুস্তাফা বালি বলেন, আমরা অসহায় নই। আমরা মরিয়াও নই। কালাশনিকভ রাইফেল নিয়ে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে আমরা আন্তর্জাতিক জোট গঠন করেছি। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং বিজয় অর্জনের অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের। ১ লাখ যোদ্ধা নিয়ে আমরা নিশ্চই অন্য কাউকে আমাদের পাশে পাবো অংশীদার হিসেবে। তবে পাঁচ বছরের বন্ধুত্ব, অংশিদারিত্ত এভাবে অকস্মাৎ, অশোভনভাবে শেষ হয়ে যাবে ভাবিনি।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, নেটো, আরব নেতারা এবং অন্যান্য অধিকার সংস্থাগুলো, তুরস্কের এই হামলার নিন্দা করেছে। সিরিয়ার মানবিক সংকট বৃদ্ধির বিষয়ে এটি আংকারার জন্য একটি সতর্কবাণী। ৪০ লক্ষ সিরিয়ও আশ্রয়প্রার্থীর বাস তুরস্কে। এরদোয়ান বলেন এখন সময় হয়েছে তাদের বাড়ী ফেরার। ভয়েস অফ আমেরিকার তুরস্ক বিভাগের সংবাদদাতা ইস্তানবুলে শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলে্ছেন।

তারা বলেন,আরবদের সেখান থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। ঐ অঞ্চলে বিভিন্ন কুর্দি গোষ্ঠীদের নিয়ে আসা হয়।আর এই জন্যেই আমরা তুরস্ক সামরিক বাহিনীর হামলার সমর্থন করি। ফিরে যাবার মতো নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা হলে আমরা অবশ্যই ফিরে যাব।

হামিদ নাসার বলেন,তিনি বলেন, আমি সবার প্রথমে ফিরে যাব। আমি এখানে আর একটি দিনও থাকতে চাইনা। আমার এখানে অনেক বন্ধুবান্ধব রয়েছে এবং তারাও ফিরে যেতে চাই। আমরা বিরক্ত হয়ে গেছি। ফিরে যেতে চাই নিজ বাড়িতে।

মুস্তাফা কিরমিযি বলেন,তিনি বলেন, আমরা আশা করছি এই হামলা বিজয় নিয়ে আসবে। নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা হলেই আমরা তুরস্ক থেকে নিজ দেশে ফেরত যেতে চাই।

৮ বছর ধরে চলতে থাকা এই সহিংসতা সিরিয়ার কোনও প্রান্তেই কোনও ধরণের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এখনো পর্যন্ত দিচ্ছেনা।


XS
SM
MD
LG