অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মন্ত্রীসভা গঠনের কাজ অনেকদূর এগিয়ে নিয়েছেন ট্রাম্প শুরু হয়েছে সমালোচনা


নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের ছয় সপ্তাহ বাকী থাকতে মন্ত্রীসভা গঠনের কাজ অনেকদূর এগিয়ে নিয়েছেন। গত সপ্তাহে তিনি প্রতিরক্ষা, পরিবেশ. হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও গৃহায়ন মন্ত্রনালয়ের জন্য মন্ত্রী হিসাবে যাদেরকে পছন্দ তা ঘোষণা করেছেন। চীনে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতও ঠিক করেছেন। তবে এসবের সমালোচনাও শুরু হয়েছে।

জীবাশ্ম জ্বালানীর শক্ত সমর্থক ওকলাহোমার এ্যাটর্নী জেনারেল স্কট প্রুইটকে পরিবেশ রক্ষা বিষয়ক সংস্থার দায়িত্ব দেয়ার হবে বলে জানা যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন যে মনুষ্য সৃষ্ট তার বৈজ্ঞানিক প্রমান থাকার পরও প্রুইট বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় সমালোচিত হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জলবায়ু পরিবর্তন নীতিমালার বিরুদ্ধে তিনি মামলাও করেছেন।

অনেকেই পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব তাঁকে দেয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। গৃহায়ন ও নগর উন্নয়নে নিউরোসার্জন বেন কার্সনের মনোনয়োনকেও সমালোচনা করা হচ্ছে। তবে ডনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য ভিন্ন।

ট্রাম্প বলেচেন; “আমি বিশ্বাস করি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট মন্ত্রিসভা গঠিত হতে যাচ্ছে যেমনটি এই দেশের ইতিহাসে কখনো হয়নি”।

ইরাক যুদ্ধের ভেটারান অবসরপ্রাপ্ত মেরিন জেনারেল জন কেলি হতে যাচ্ছেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের নতুন প্রধান। ট্রাম্পের অবৈধ অভিবাসি বিরোধী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কাজ করবেন তিনি।

বুধবার ট্রাম্প বৈঠক করেন শিকাগোর মেয়র রাম এম্যানুয়েলের সঙ্গে। কাগজপত্র বিহিন বিদেশী শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় ১৪টি শহরের মেয়রদের স্বাক্ষর করা অনুরোধের চিঠি দিয়েছেন তিনি নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে।

রাম এম্যানুয়েল বলেন, “তারা আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করছে। তাদের এতে কোনো দোষ নেই কারন তাদের বাবা মায়েরা তাদেরকে এদেশে নিয়ে এসেছে। তাই তাদেরকে আমাদের গ্রহণ করা উচিৎ”।

ডনাল্ড ট্রাম্প কথা বলেছেন রেসলিং নির্বাহী লিন্ডা ম্যাকমহনের সঙ্গে। তাকে ক্ষুদ্র ব্যাবসা প্রশাসনের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে।

ঐ সাক্ষাৎ নিয়ে লিন্ডা বলেন, “আমরা ব্যাবসা ও বিনিয়োগ নিয়ে কথা বলেছি। চাকুরীর সংস্থান এবং ক্ষুদ্র ব্যাবসা প্রশাসন নিয়েও কথা বলেছি।

বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে আইওয়া গভর্ণর টেরি ব্র্যানস্ট্যাডের। তাঁকে চীনে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত করা হতে পারে। দীর্ঘ সময়কার রিপাবলিকান এই গভর্ণরের সঙ্গে চীনের প্রেসিডন্ট শি জিনপিং এর ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ট্রাম্পের মন্ত্রীসভাসক অন্যান্য শীর্ষ স্থানে নিয়োগের জন্য যাদের নাম এসেছে তাদের সকলের চেয়ে টেরির নিয়োগের বিষয় সবচেয়ে গ্রহনসযোগ্য হয়েছে।

ট্রানজিশন টিম বলছে আগামী সপ্তায় মন্ত্রিসভায় আরো কয়েকজনকে নিয়োগের জন্য মনোনয়োন দেয়া হবে। ট্রাম্প বলেছেন তিনি সম্ভাব্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রার্থী তালিকা খাটো করেছেন। তবে ট্রাম্পের সাবেক সমালোচক মিট রমনী ওই তালিকায় রয়েছেন।

নতুন প্রশাসনের পররাষ্ট্র নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে অনেকে দারনা করছেন। ট্রাম্প নিজেও এমন আভাষ দিয়েছেন।

ট্রাম্প বলেন, “বিদেশী সরকার, যাদেরকে আমরা ভালো করে জানি না সেখানে অভিযান বন্ধ করা হবে। আমরা সেসব ক্ষেত্রে নিজেদেরকে জড়াবো না। বরং আমাদের লক্ষ্য হবে সন্ত্রাস ও আইসিস ধ্ধংস করা”।

অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল জেমস ম্যাটিস (ম্যাড ডগ) কে প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দেয়ার সিদ্ধান্তে ট্রাম্প সমর্থকরা উৎফুল্ল হয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীকে পূনর্গঠনের কথা বলেছেন।

ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করে নতুন প্রশাসনের পররাষ্ট্র নীতিতে হস্তক্ষেপ নীতি নিয়ে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র নীতি বিশেষজ্ঞ মাইকেল ও হ্যানলন, “আমার ধারনা এটি অঞ্চল ভিত্তিতে হবে। যেমন ট্রাম্প আইসিস ধ্ধংসের কথা বলেছেন। এটি কিন্তু তার সেই নন-ইন্টারভেনশন বক্তব্যের সঙ্গে যায় না”।

নির্বাচনী প্রচারণার পুরো সময় ডনাল্ড ট্রাম্প তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারী ক্লিনটনের সমালোচনা করেন; ইরাক লিবিয়ায় সেনা অভিযানের জন্যে। ঐসব অঞ্চলে অস্থিতিশীল ও সন্ত্রাসের জন্য তাঁকে দায়ী করেন তিনি। আইসিস দমনে ট্রাম্প চান স্বল্প আকারের সেনা অভিযান।

বললেন মাইকেল হ্যানন, “অন্য কথায় বলা যায় তিনি আইসিস দমনে সুনির্দিষ্ট আক্রমন অভিযান চালাতে চান। তাদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ঐ হামলার জন্য সীমিত আকারে সেনা রাখার পক্ষে তিনি”।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেকের মাস দুয়েক আগে থেকএ মন্ত্রীসভার বিভিন্ন শীর্ষ দায়িত্বে যাঁদেরকে নিয়োগ দেয়ার কথা বলা হচ্ছে; তাঁদের সকলকে নিয়ে আশা করা হচ্ছে তাঁর পররাষ্ট্র ও অভ্যন্তরীণ নীতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন দিগন্তের সৃষ্টি করবে।

XS
SM
MD
LG