অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যকার বানিজ্যিক সম্পর্কে উপকৃত হবে বাংলাদেশ


ওয়াশিংটন ডিসি’তে ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির, এশিয়া ও প্যাসেফিক সাবকমিটির শুনানীতে বিশেষজ্ঞরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যকার বানিজ্যিক সম্পর্ক এখন সবচেয়ে ভাল অবস্থানে রয়েছে। এবং দিনে দিনে তা আরো বাড়ছে। আর এর মধ্য দিয়ে দক্ষিন এশিয়ার দেশগুলো বিশেষ করে বাংলাদেশ উপকৃত হবে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন রোকেয়া হায়দার ও তাওহীদুল ইসলাম।

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত সম্পর্ক: অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধায় গনতান্ত্রিক অংশীদারিত্ব- শীর্ষক ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির, এশিয়া ও প্যাসেফিক সাবকমিটির শুনানীতে বিশেষজ্ঞরা-- যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যকার বানিজ্যিক সম্পর্ক, সেই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের বানিজ্যিক সম্পর্ক এবং ভারতের অভ্যন্তরীন রাজনীতি ও অর্থনীতি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেন।

এসময় ‘কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স’ এর সিনিয়র ফেলো এলেইসা আয়ারস বলেন, আইএমএফ এর তথ্য অনুযায়ী অর্থনীতির দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ দশটি দেশের মধ্য রয়েছে ভারত। দেশটির অর্থনীতি বাড়ছে সাত দশমিক তিন শতাংশ হারে। যে কারনে গত বছর ভারত ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত গতিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ। আয়ারস বলেন-

“২০০২ সাল থেকে বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষনের মধ্য দিয়ে মেক ইন ইন্ডিয়ার প্লাটফর্ম তৈরী হয়েছে। অনেক আমেরিকান কম্পানী ভারতে পন্য প্রস্তুত করছে, অথবা এর সুবিধা নিতে চাইছে। সুতরায় এটা অনেক আমেরিকান কম্পানীর বড় ধরনের আয়ে সাহায্য করছে। উদাহরন হিসাবে জেনারেল মটরস এর কথা বলা যেতে পারে।“

আমেরিকান ইন্টারপ্রাইজ ইনষ্টিটিউট এর রেসিডেন্ট ফেলো সাদানন্দ ধোমি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষীক বানিজ্যের পরিমান গত বছরে পৌঁছায় ১০ হাজার সাতশো কোটি টাকায়। আর অর্থনৈতিক সম্পর্কের এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে, রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে। ধোমি বলেন-

“আমি মনে করি, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত সে কোন সময়ের চেয়ে এখন বেশী ঘনিষ্ট ভাবে এক অপরকে সহযোগিতা করছে। বানিজ্য চলে গেছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের উপরে। আপনি যদি বৃহৎ পরিসরে দেখেন, তাহলে এটা রাজনৈতিক সম্পর্কের কারনেই হয়েছে। আমি মনে করি যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে এই সম্পর্ক হওয়ার কারন এশিয়া এবং ঐ বৃহৎ অঞ্চলে কি হচ্ছে তা নিয়ে দেশ দুটির একই ধরনের সচেতনতা রয়েছে। এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ন, কিন্তু এটা রাজণৈতিক ও নিরাপত্তা উৎবেগ থেকে তৈরী হওয়া বৃহৎ সম্পর্কের অংশ বিশেষ।“

অনেক দিক দিয়ে দেশ দুটি একই অবস্থানে রয়েছে বলেই, এই অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে এমনটা মনে করেন সেন্টার ফর এসট্রাটেজিক এন্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ এর সিনিয়র ফেলো রিচার্ড এম রওসো। তিনি বলেন-

“উভয় দেশের মধ্যে এই সম্পর্ক থাকার কারন উভয় দেশের শক্ত অর্থনীতি রয়েছে, উভয় দেশেই অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। এবং আমি মনে করি এসব ইস্যুর উপর ভিত্তি করে, উভয় দেশের উচিৎ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সুন্দর ও শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তোলা।“

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যকার এই সম্পর্ক, দক্ষিন এশিয়াতে কি ধরনের প্রভাব ফেলবে—ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সাবকমিটি তা জানতে চাইলে এলেইসা আয়ারস বলেন, চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে না হলেও, প্রতিবেশী ছোট দেশ গুলোর সঙ্গে ভারতের বানিজ্যিক সম্পর্ক ভাল। তিনি বলেন-

“ভারতের চারপাশে থাকা ছোট দেশগুলোর সঙ্গে দেশটির উন্মুক্ত বানিজ্য রয়েছে। সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত পুননির্ধারিত হয়েছে। এবং দেশ দুটির মধ্যে বানিজ্য তাৎপর্যপূর্ন ভাবে বাড়ছে।“

সেক্ষেত্রে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাংলাদেশের ওপর কি ধরনের প্রভাব ফেলবে, ভয়েস অফ আমেরিকার এমন এক প্রশ্নের জবাবে সাদানন্দ ধোমি বলেন-

“আমি মনে করি বাংলাদেশ সহ ঐ অঞ্চলের জন্য এটা সুখবর। যেহেতু বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে দক্ষিন এশিয়া বেশী করে সমন্বিত হচ্ছে, তাই যেসব দেশ সুবিধা পাবে তার মধ্যে একটি হবে বাংলাদেশ। কারন দেশটির সঙ্গে ভারতে ঘনিষ্ট অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। এবং সে সম্পর্কও দ্রুত বাড়ছে।“

XS
SM
MD
LG