অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

অনলাইন ব্যবসাগুলো হুমকির মুখে পড়েছে


হঠাৎ করেই যেন সবকিছু থমকে দিয়েছে এক অজানা অচেনা অদৃশ্য শত্রু।স্বাভাবিক নিয়মে জীবন চলতে পারছেনা। ব্যবসা-বাণিজ্য থেমে আছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। অফিসগুলো সীমিত পরিসরে চলছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ এই অদৃশ্য শত্রুর কারণে ঘর থেকে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু এভাবে কতদিন? মানুষের আয় থেমে গেছে। বেচা-কেনা আগের মতো হচ্ছে না।

অন্যান্য বিভিন্ন ব্যবসার মতো অনলাইন ব্যবসাগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। এই অনলাইন ব্যবসাগুলোর সাথে জড়িত রয়েছে অনেকগুলো প্রাণ। তাদের বাঁচাতে হলে এই ব্যবসাকে বাঁচাতে হবে। কিন্তু কিভাবে? এই মহামারীর সময়ে একটি অনলাইন ব্যবসাকে কিভাবে বাঁচিয়ে রাখা যায়? বাংলাদেশের নারীরা বিভিন্ন ধরণের ব্যবসা করছেন এখন। তারা স্বাবলম্বী হয়েছেন। কিন্তু এমন পরিস্থিতি আগে কেউ কখনো মোকাবেলা করেনি। তাই এই নারীদের এখন পহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। তবে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে তারা হাল ছেড়ে দেননি। মনের ভেতর সুন্দর সময়ের অপেক্ষার আশা জ্বালিয়ে ঘরে বসে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত পাঁচ নারী ব্যবসায়ী এবারের নারীকণ্ঠের অতিথি। তারা জানিয়েছেন ব্যবসা বাঁচিয়ে রাখার জন্য এই মহামারীর মাঝে কি পদক্ষেপ নিয়েছেন।

মাহনায বিনতে কাউসার ব্যবসা শুরু করেন বছর সাতেক আগে। ছোট্ট পরিসরে শুরু করা কসমেটিক্সের ব্যবসা প্রসার লাভ করে। অনলাইনে ব্যবসার পাশাপাশি এখন একটি দোকানও রয়েছে যা এই মুহূর্তে বন্ধ রয়েছে।মাহনায বলেন, বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের আসলে বছরের তিনটি সময়ে ভালো বেচা-কেনা হয়ে থাকে এক হচ্ছে পহেলা বৈশাখের সময় দুই রোজার ঈদের সময় এবং ঈদুল আযহার সময়। আমরা সবাই কিন্তু সারা বছর এই তিনটা সময়ে বিনিয়োগ করি। এক প্রকার বলা যেতে পারে আমরা আমাদের সমস্ত পুঁজি এই তিনটি সময়ে ব্যবসায় বিনিয়োগ করি কিন্তু খুবই দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে এবার সবকিছু স্থবির হয়ে পড়েছে এর তা লক্ষ্য করা শুরু করি পহেলা বৈশাখে। আমরা বৈশাখের আগে থেকে সবকিছু মজুদ করতে আরম্ভ করি কেননা এরপর সব ধরণের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমাদের আগে থেকে মজুদ করতে হয়। মার্চে যখন প্রথম করনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয় তখন থেকেই বলতে গেলে আমাদের ভরাডুবি শুরু হয়।

কাজী রাজিয়া আলম বলেন, ‘আমাদের ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ । পহেলা বৈশাখ ছিল তারপরে রোজা চলে এসে পড়লো কিন্তু বেচা কেনা করতে পারিনি।আমাদের নিজের একটি শোরুম আছে শোরুমের বন্ধ হয়ে আছে লকডাউনের কারনে। প্রোডাক্টগুলো আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে কালেক্ট করি বাইরে থেকে আনা হয় সেগুলো আমরা আনতে পারিনি আর যেগুলো আমরা স্টক করেছিলাম আমরা সেল করতে পারছিনা। বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতারা কল দিচ্ছে কিন্তু ফোন দিলে কি হবে সবাই চলে গিয়েছে যার যার গন্তব্যস্থানে। আমরা প্রোডাক্টগুলো পৌঁছে দিতে পারছিনা। আমার ব্যবসায় তো অনেক লোকসান হচ্ছে আমি আমাদের যারা কর্মীরা কাজ করে যারা আমার শোরুমে কাজ করে তাদেরকে আমার বেতন দিতে প্রবলেম হচ্ছে কিন্তু তারপরও আমি আমার নিজের দায়িত্ব থেকে তাদেরকে সবকিছু দিয়ে যাচ্ছি। আমার হয়তোবা অনলাইন ব্যবসা বা শোরুম টা বন্ধ আছে আমি বন্ধ রেখেছি, দেশের অবস্থা ইনশাল্লাহ যখন ভালো হবে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে আমি আবার আমার ব্যবসা সবকিছু শুরু করবো

ইশরাত জাহানএর দেশে বিদেশে অনেক ক্রেতা রয়েছে। তাঁর অধিনে কর্মরত প্রায় পঁয়তাল্লিশজন কর্মী এখন পুরোপুরি তাঁর ওপর নির্ভর করছে। আর সে কারনেই ইশরাত তাঁর ব্যবসা চালু রেখেছেন। যারা ডেলিভারি দিচ্ছেন তাদের সুরক্ষা পোশাক দিচ্ছেন ইশরাত এবং ক্রেতাদের অনুরোধ করছেন সুরুক্ষা নিশ্চিত করে তারা যেন তাদের অর্ডারকৃত পণ্য গ্রহণ করেন।

সাত-আট মাস আগে হাতে তৈরি গহনার ব্যবসা শুরু করেন শারাবন তহুরা জিনিয়া। ভিন্ন ধরণের পণ্য দিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারলেও আপাতত সবকিছু বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্য। অনেক কষ্টের সময় পার করেছেন তিনি। বলছিলেন, তিনি এর মাঝেও ক্রেতাদের প্রচুর কল পাচ্ছেন কিন্তু পণ্য পৌঁছে দিতে পারছেন না। তিনি আশাবাদী পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যখন সবাই নির্ভয়ে পণ্য কিনতে শুরু করবেন তখন আবার আগের মতো ক্রেতাদের পছন্দসই গহনা দিতে পারবেন।

ড চিং বলেন এবারের ঈদের স্লোগান ছিল দেশীয় পণ্য দিয়ে ঈদ পালন। করোনাভাইরাস শুরু হবার আগে তাঁর কাছে দেশীয় শাড়ির মজুদ ছিল এবং সে কারণে তিনি অনলাইন ব্যবসা চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। তবে বলেন, ক্রেতাদের আগ্রহ তেমন নেই।যারা খুব কাছের মানুষ বা বিশ্বস্ত ক্রেতা যারা শুধু তারাই কিনছেন। ড চিং বলেন স্বাভাবিক সময়ে তাঁর যে পরিমাণ ব্যবসা হয়ে থাকে তার মাত্র বিশ শতাংশ হচ্ছে এখন। কর্মীদের কথা চিন্তা করে এবং করনাকালে ব্যবসা বাচিঁয়ে রাখতে তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন।

অনলাইন ব্যবসাগুলো হুমকির মুখে পড়েছে
please wait

No media source currently available

0:00 0:12:43 0:00

XS
SM
MD
LG