অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশ জুড়ে অনুভূত হচ্ছে তীব্র গরম, স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা


বাংলাদেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।
বাংলাদেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।

বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক গ্রীষ্মকাল শুরু হয়েছে এক সপ্তাহের কম সময় আগে। ইতোমধ্যেই তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে। কোথাও কোথাও চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অফিস বলছে, তীব্র তাপপ্রবাহ প্রবণ অঞ্চলগুলো ছাড়াও, দেশের ব্যাপক অঞ্চল জুড়ে বিরাজ করছে মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ।

অনেক স্থানেই তাপমান ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। এমন তপ্ত আবহওয়ার কারণে স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৫ দিন পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা নেই বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া দফতর।

তাপপ্রবাহ

শনিবার (২০ এপ্রিল) নিয়মিত বুলেটিনে সকাল ৯টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টার বার্তায় আবহাওয়া অফিস বলেছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

তাপ প্রবাহের সতর্কবার্তায় শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বলা হয়েছিলো, বাংলাদেশের দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।

শনিবারের বুলেটিনে বলা হয়, ৫ দিনে চলমান অবস্থার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানায় আবহাওয়া বিভাগ।

বুলেটিনে বলা হয়, সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে। ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে, দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে বলে জানায় আবহাওয়া বিভাগ। সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে আবহাওয়া অফিস বলেছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

শুক্রবারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায় এবং শনিবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও সিলেটে।

এছাড়া, শুক্রবার রাজধানী ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বাগেরহাটে তাপমাত্রা ৪১.৭ ডিগ্রি

বাগেরহাটের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রের্কড করে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাগেরহাটে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রের্কড করা হয়।

বাগেরহাটে ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রের্কড হয়েছিল।
বাগেরহাটে ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রের্কড হয়েছিল।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের তাপ বাড়তে থাকে এই এলাকায়। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, বাগেরহাটের ওপর দিয়ে আরো কয়েকদিন তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বাগেরহাটে তীব্র তাপপ্রবাহ চলেছে।

তিনি আরও বলেন, গত বুধ ও বৃহস্পতিবার বাগেরহাটে তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপপ্রবাহ আরো কয়েকদিন বয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।

খুলনায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি

শনিবার (২০ এপ্রিল) খুলনায় বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, এর আগে ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল তাপমাত্রায় রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এমন তাপপ্রবাহে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ পড়েছেন বিপাকে। তীব্র গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে নগর জীবনে। সামর্থবান মানুষ জরুরি প্রয়োজজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

স্কুল-কলেজ বন্ধ ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত

চলমান তাপপ্রবাহের কারণে আগামী ২৭ এপ্রিল (শনিবার) পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বাংলাদেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

তাপপ্রবাহের কারণে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
তাপপ্রবাহের কারণে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

শনিবার (২০ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়েরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।ঈদের ছুটি শেষে আগামীকাল (২১ এপ্রিল) দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে এ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।

এর আগে, বর্তমান তাপপ্রবাহ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো।

শনিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মাহবুবুর রহমান তুহিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছিলো। বলা হয়েছিলো, দেশজুড়ে চলমান তাপপ্রবাহের ওপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তীক্ষ্ণ নজর রাখছে।

XS
SM
MD
LG