অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মিয়ানমার থেকে বুধবার স্বদেশে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি নাগরিক


মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তওয়ে কারাগার থেকে ১৭৩ বাংলাদেশি বুধবার দেশে ফিরেছেন।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তওয়ে কারাগার থেকে ১৭৩ বাংলাদেশি বুধবার দেশে ফিরেছেন।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিতওয়ে কারাগার থেকে স্বদেশে ফিরে আসছেন ১৭৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক। বুধবার (২৪ এপ্রিল) তাদের বাংলাদেশে ফিরে আসার কথা রয়েছে।

ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের কারণে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকতে বাধ্য হওয়া মিয়ানমার প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে আনতে দেশটির নৌবাহিনীর জাহাজ চিন ডুইন বাংলাদেশে যাচ্ছে। এই জাহাজে করে ১৭৩ বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত পাঠানো হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) এই জাহাজ বাংলাদেশ ভূখণ্ডে পৌঁছাবে। তখন বাংলাদেশি নাগরিকদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এই ১৭৩ বাংলাদেশি নাগরিকের মধ্যে রয়েছেন; কক্সবাজারের ১২৯ জন, বান্দরবানের ৩০ জন, রাঙামাটির ৭ জন এবং খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার একজন করে।

মিয়ানমারের জাহাজটির বাংলাদেশে সম্ভাব্য সফরের তথ্য পাওয়ার পর মিয়ানমারে কারাগারে থাকা বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর সুযোগ কাজে লাগাতে তৎপর হয় ইয়াঙ্গুনের বাংলাদেশ দূতাবাস। এরপর তারা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করে।

দূতাবাস মিয়ানমারে বিভিন্ন কারাগারে থাকার পর মেয়াদ শেষ হওয়া বা ক্ষমাপ্রাপ্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে ১৪৪ জনকে নির্বিঘ্নে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে।

এছাড়া, আরো ২৯ জন যাচাই করা বাংলাদেশি নাগরিকের মুক্তির বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস অনুরোধ করে। এরা এখনো কারাদণ্ড ভোগ করছেন বা বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

এদিকে, গত বছরের ৩ অক্টোবর দুই দেশের মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফিরে আসে ২৯ বাংলাদেশি নাগরিক। সর্বশেষ বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনের পর থেকে ইয়াঙ্গুনের বাংলাদেশ দূতাবাস এবং সিতওয়েতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট বাকিদের ফিরিয়ে আনতে কাজ শুরু করে।

ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাস, বাংলাদেশ কনস্যুলেট ও সিতওয়ের প্রতিনিধিরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া পরিচালনা করেন। পরে প্রত্যাবর্তনকারীদের অনুকূলে ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করা হয়।

হাছান মাহমুদ যা বলেছিলেন

এর আগে, গত ৩ এপ্রিল বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের ১৮০ জন সীমান্তরক্ষী ও সেনা সদস্যকে ফেরত পাঠানোর পাশাপাশি মিয়ানমারে আটকে পড়া ১৭০ জন বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি।

গত ৩ এপ্রিল দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। হাছান মাহমমুদ জানান, মিয়ানমারের ১৭৭ জন বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্য ও পরে তিনজন সেনাসদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

“আমাদের সঙ্গে আলোচনায় মিয়ানমার সরকার তাদের ফেরত নিতে সম্মত হয়েছে। তারা নৌপথের প্রস্তাব দিয়েছিলো; আমরা এ সপ্তাহেই তাদের ফেরত পাঠাবো বলে আশা করছিলাম। সমুদ্র অনুকূলে না থাকায় আগামী সপ্তাহে বা সমুদ্র শান্ত হলে দ্রুত তাদের পাঠানো হবে;” জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পাশাপাশি, মিয়ানমারে আটকে পড়া ১৭০ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো, সেই প্রস্তাবে তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে বলে জানান ড. হাছান।

XS
SM
MD
LG