আইওএম এর তিউনিশ শাখার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে যে তারা বল প্রয়োগ করে বাংলাদেশীদের দেশে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করছে।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন লন্ডন থেকে মতিউর রহমান চৌধুরী।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা আইওএম বাংলাদেশী অভিবাসীদের ওপর বল প্রয়োগের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বলেছে, অভিবাসীদের আগ্রহেই তাদেরকে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আইওএম এর তিউনিশ শাখার বিরুদ্ধে ৬৪ জন বাংলাদেশী প্রথমে অভিযোগ করেন, তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। অন্তত ৩০ জন বাংলাদেশীকে জোর করে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি চাপা পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম গার্ডিয়ান তা নতুন করে সামনে এনেছে। গত ৩১শে মে লিবিয়া উপকূলে জ¦ালানি ফুরিয়ে যাওয়া ও বিকল নৌকায় সাগরে ভাসতে থাকায় তিউনিশিয়ার নৌ পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে। ১৯ দিন সাগরে ভাসায় তারা নরক যন্ত্রণার মধ্যেই ছিল। এসময় আইওএম তিউনিশিয়া শাখার কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দেশে ফেরার প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশী অভিবাসীরা দেশে ফিরতে চায় না বলার পর এই কর্মকর্তারা বল প্রয়োগ করেন। নানাভাবে চাপ দিতে থাকেন।
বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারাও একইভাবে চাপ দিতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে অভিযোগ যায় তিউনিশিয়ার একটি বেসরকারি সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর মাইগ্রেশনের কাছে। তারা তদন্ত শুরু করে দেখতে পায়-বাংলাদেশী এই গ্রুপটিকে গ্রেপ্তার এড়াতে একটি সাদা কাগজে সই করতে বলা হয়। বাংলাদেশী দূতাবাসের তরফে তাদেরকে এই বলে সতর্ক করা হয় যে, তারা যদি সাদা কাগজে সই না করে তাহলে তারা অর্গান ট্রাফিকিং এর শিকার হতে পারে। বাংলাদেশীদের জবানবন্দিও রেকর্ড করে সংস্থাটি।
ওদিকে অব্যাহত চাপের মুখে ৫৩ জন বাংলাদেশী দেশে ফিরে গেছেন। এখন সমস্যা হচ্ছে ১১ জনকে নিয়ে। তারা নানাভাবে বলার চেষ্টা করছে, কোন অবস্থাতেই বাংলাদেশে ফিরে যাবে না। এমনকি আত্মহত্যা করবে এমনটাও ইশারা ইঙ্গিতে প্রকাশ করেছে। ঢাকার বিদেশ মন্ত্রণালয়ে এই ১১জন বাংলাদেশীকে ফেরানোর জন্য একাধিক বৈঠক হয়েছে। সর্বশেষ বৈঠকে ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরপর দূতাবাসের তরফে অভিবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হলে তারা দেশে ফেরার ব্যাপারে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। লিবিয়াস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সেকান্দার আলী এই প্রতিনিধিকে বলেন, আমরা তাদে বুঝানোর চেষ্টা করছি, কিন্তু তারা কোন অবস্থাতেই রাজি হচ্ছে না। এর পেছনে বিশেষ কোন কারণ থাকতে পারে। তার মতে, কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠি যারা মানবপাচারের সঙ্গে কোন না কোনভাবে যুক্ত তারা হয়তো এখানে ভুমিকা রাখতে পারে। রাষ্ট্রদূত অবশ্য নিপীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করেন।