আফগানিস্তানের তালিবান সরকার শুক্রবার নারী অধিকারের বিষয়ে একটি আদেশ জারি করে বলেছে, নারীদেরকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেয়া যাবে না বা শান্তি অথবা বিবাদের মীমাংসা হিসেবে তাদের দান করে দেওয়া যাবে না।
ধর্মীয় নির্দেশটি এমন সময়ে দেয়া হয়েছে যখন কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠীটি আগস্টে সংঘাত-বিধ্বস্ত দেশটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর মানবাধিকার, বিশেষ করে নারীদের অধিকার সমুন্নত রাখার জন্য আন্তর্জাতিক চাপের সম্মুখীন হয়।
তালিবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদের মাধ্যমে গণমাধ্যমে প্রকাশিত এই নির্দেশে বলা হয়েছে, “নিকাহ/বিয়ের সময় প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের সম্মতি নেয়া প্রয়োজন। কেউ জোরপূর্বক বা চাপ দিয়ে নারীদের বিয়ে করতে বাধ্য করতে পারবে না।”
নিকাহ হচ্ছে মুসলিম নিয়মে বিয়ের অনুষ্ঠান।
“একজন নারী সম্পত্তি নয়, বরং একজন মহৎ ও মুক্ত মানুষ; কেউ তাকে শান্তি চুক্তির বিনিময়ে বা শত্রুতা শেষ করতে কারও কাছে দান করে দিতে পারে না।” এতে বলা হয়েছে, বিধবাদের অবশ্যই তাদের প্রয়াত স্বামীর সম্পত্তির অংশ দিতে হবে।
মুজাহিদ বলেছেন যে তালিবান নেতৃত্ব সমস্ত প্রাসঙ্গিক আফগান প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় গুরু এবং দেশজুড়ে উপজাতীয় প্রবীণদের নির্দেশ দিয়েছে নিয়মগুলি প্রয়োগ করতে। নারীদের বিরুদ্ধে "চলমান নিপীড়ন" প্রতিরোধ করতে এ সম্পর্কে জনসচেতনতা প্রচার করতে বলা হয়েছে।
নির্দেশটি সুপ্রিম কোর্টকে মহিলাদের অধিকার, বিশেষ করে বিধবাদের মামলাগুলির সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় নিয়মগুলি বিবেচনায় রেখে আফগানিস্তান জুড়ে সমস্ত আদালতের প্রতি নির্দেশ জারি করতে বলেছে।
তালিবানের এই আদেশে মেয়েদের শিক্ষা বা নারীদের বাড়ির বাইরে কাজ করার বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থী গোষ্ঠী সেপ্টেম্বরে ছেলেদের স্কুলে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল, কিন্তু অনেক আফগান প্রদেশে মেয়েরা এখনও তাদের ক্লাস পুনরায় শুরু করার জন্য অপেক্ষা করছে। দেশি এবং বিদেশী পর্যবেক্ষকরা এই পরিস্থিতির কঠোর সমালোচনা করেছেন।