ইকুয়েডরের উপকূলীয় একটি কারাগারে অপরাধী চক্রের সদস্যদের মধ্যে দাঙ্গায় অন্তত ১১৬ জন নিহত ও ৮০ জন আহত হয়েছে। ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট এ ঘটনার পর সব কারাগারে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। কর্তৃপক্ষ বলছে এটি ইকুয়েডরের কারাগারে ঘটা সবচেয়ে ভয়াবহ সহংসতা। নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচ জনের মাথা কেটে ফেলা হয়েছে।
বুধবার থেকে প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসোর জারি করা জরুরী অবস্থায় সরকার কারাগারের ভেতরে পুলিশ ও সেনা নিয়োগ করতে পারবে। গুয়াইয়াকুইল শহরের লিটোরাল অনুতাপ কেন্দ্রে সহিংসতার একদিন পর এই নির্দেশ দেয়া হয়। কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের সম্পৃক্ত অপরাধী গোষ্ঠীগুলো সেখানকার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্যে সংঘাতে লিপ্ত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট লাসো বলেন কারাগারে যা ঘটেছে সেটি অত্যন্ত বাজে এবং দুঃখজনক ঘটনা। তিনি বলেন তিনি এখনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না যে কর্তৃপক্ষ সেই আটক কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে পেরেছে।
দাঙ্গার পর সামাজিক মাধ্যমে প্রাকাশিত ছবিতে কারাগারের ৯ ও ১০ নম্বর প্যাভেলিয়নে কয়েক ডজন রক্তাক্ত মৃতদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। মনে হয় যেন একটি যুদ্ধক্ষেত্র। কর্মকর্তারা জানান দাঙ্গায় তারা আগ্নেয়াস্ত্র, ছুরি, ও বোমা ব্যবহার করে । এর আগে আঞ্চলিক পুলিশ কমান্ডার বলেন কারাগারের পাইপলাইনেও মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
ইকুয়েডরের জাতীয পূণর্বাসন পরিষদের সাবেক প্রেসিডেন্ট লেডি জুনিগা বলেন, “দেশের ইতিহাসে এমন ঘটনা বা এর কাছাকাছি কোন ঘটনা ঘটেনি”।
ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট বলেছেন কারাগারের বন্দীদের আত্মীয় স্বজনদের জন্যে থাকা খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে, তাদের মানসিক সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে। । তিনি বলেন দেশের কারা ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে ২ কোটি ৪০ লাখ ডলারের প্রকল্প নেয়া হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন ও উন্নত প্রযুক্তি সম্বলিত কারাগার উন্নয়ন কাজ শুরু হবে উপকূলের ঐ লিটোরাল কারাগার দিয়েই।
গত জুলাইতে কারাগারে এমনি সহিংসতার কয়েকটি ঘটনার পর প্রেসিডেন্ট জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন। সে সময় ১০০ জনেরও বেশী বন্দী মারা যান। তবে সেই ঘটনা মঙ্গলবারের দাঙ্গার মতো একটি কারাগারে নয়, বিভিন্ন কারাগারে ঘটেছিল।
তার আগে ফেব্রুয়ারিতে দেশের তিনটি কারাগারে একযোগে দাঙ্গা শুরু হলে ৭৯ জন বন্দী নিহত হন। জুলাইয়ের দাঙ্গায় লিটোরাল অনুতাপ কেন্দ্রে মারা যান ২২ জন, সেপ্টেম্বরে একটি অনুতাপ কেন্দ্রে ড্রোন হামলা হলেও হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি।