অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

উত্তর কোরিয়াকে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র


জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রীনফিল্ড জাতিসংঘ সদর দফতরে একটি সংবাদ সম্মেলনের সময় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন।(ফাইল ছবি-এপি/ম্যারি আলটাফের)
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রীনফিল্ড জাতিসংঘ সদর দফতরে একটি সংবাদ সম্মেলনের সময় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন।(ফাইল ছবি-এপি/ম্যারি আলটাফের)

এই সপ্তাহে পিয়ংইয়ং একটি সাবমেরিন থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার পর বুধবার জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত উত্তর কোরিয়াকে আর কোন ধরণের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার এবং "টেকসই ও অর্থবহ সংলাপে" অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার পিয়ংইয়ং-এর ঘোষিত সাবমেরিন থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়ে রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রীনফিল্ড বলেন, “আমাদের এই সর্বসাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপটিকে আলদা করে দেখা উচিত নয়। ধারাবাহিকভাবে বেপরোয়া উস্কানীগুলোর মধ্যে এটি সর্বসাম্প্রতিক ।”

উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের আহ্বানে আয়োজিত নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড।

উত্তর কোরিয়ার সরকারী নাম, ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অফ কোরিয়ার সংক্ষিপ্ত নাম ব্যবহার করে টমাস-গ্রীনফিল্ড বলেন, "সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকে, ডিপিআরকে একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার মধ্যে একটির সম্পর্কে ডিপিআরকে দাবি করেছে যে সেটির নতুন হাইপারসনিক গ্লাইড যানবাহন সক্ষমতা রয়েছে।"

তিনি বলেন, “এগুলো বেআইনি কাজ।এগুলো নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে এবং তা গ্রহণযোগ্য নয়। ডিপিআরকে-র ব্যাপক ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা সম্পন্ন অস্ত্র এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির প্রতিটি নতুন অগ্রগতি ঐ অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলছে এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে।

মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়া স্বল্পপাল্লার সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা এসএলবিএমের পরীক্ষা চালিয়েছে। দুই বছরের মধ্যে উত্তর কোরিয়া এই প্রথম একটি এসএলবিএম নিক্ষেপ করেছে।এই এসএলবিএম মোতায়েন করা হলে উত্তর কোরিয়ার দ্রুত অগ্রসরমান অস্ত্রাগারে এটি এমন একটি নতুন অস্ত্রের যোগ হবে যার ক্ষমতা সম্পর্কে এখনো জানা নেই।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা বন্ধ হবার পর থেকে উত্তর কোরিয়া নতুন ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র ও নিক্ষেপ পদ্ধতি চালু করেছে, যার বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধক এড়াতে পারে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বল্প বা দীর্ঘ পাল্লারই হোক উত্তর কোরিয়ার যে কোনো ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আইরিশ রাষ্ট্রদূত জেরাল্ডাইন বাইরন ন্যাসন পরিষদে তার ফ্রান্সের এবং এস্তোনিয়ার সহকর্মীদের সঙ্গে একটি যৌথ বিবৃতিতে বলেন, "এই উৎক্ষেপণগুলো স্পষ্টভাবে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার সম্পূর্ণ এবং কার্যকর বাস্তবায়নের যে প্রয়োজন রয়েছে তা জানান দিচ্ছে।সেইসঙ্গে ডিপিআরকে যে ঐ নিষেধাজ্ঞাগুলি ফাঁকি দিচ্ছে সে বিষয়ে জরুরী পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজনীয়তা মনে করিয়ে দিচ্ছে।"

"অবশ্যই অবিলম্বে ডিপিআরকে-কে তার অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ডের অবসান ঘটাতে হবে এবং তার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, অন্যান্য ব্যাপক ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা সম্পন্ন অস্ত্র বা ডব্লিউএমডি এবং পারমাণবিক কর্মসূচি- সম্পূর্ণ, যাচাইযোগ্য এবং অপরিবর্তনীয় পদ্ধতিতে পরিত্যাগ করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে"

মঙ্গলবারের পরীক্ষা চালানো হয়েছিল যখন প্রতিবেশী জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া সওলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠক করছিল।

উত্তেজনা কমাতে এবং পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে অগ্রগতির জন্য দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র বারবার উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছে।

গত সপ্তাহে এক বক্তৃতায় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।

রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, কিম বলেন, "সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র প্রায়ই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে তারা আমাদের দেশের প্রতি বৈরী ভাবাপন্ন নয়, কিন্তু তাদের আচরণ আমাদেরকে তাদের বিশ্বাস করার মত কোন কারণ দেয়নি।"

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে, উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া সামরিক মহড়া, সেইসঙ্গে কোরিয়া এবং বৃহত্তর অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে।

XS
SM
MD
LG