উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে যে তারা একটি বিমান- বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। বলা হচ্ছে, নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেপ্টেম্বর মাসে তারা এই চতুর্থ পরীক্ষা চালিয়েছে।
দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি "নতুন তৈরি বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের" একটি মাত্র ছবি পোস্ট করেছে। বৃহস্পতিবার অঘোষিত স্থান থেকে একটি চলমান যান থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে।
ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্লেষকরা বলছেন যে পরীক্ষাটি তূলনামূলক ভাবে ছোটখাট অগ্রগতির লক্ষণ বলে মনে হচ্ছে। তাদের মতে, এটি ছিল উত্তর কোরিয়ার দ্রুত আধুনিকীকরণ এবং তার ক্ষেপণাস্ত্র বহর দেখানোর একটা ব্যাপক কৌশলের অংশ।
কার্নেগি এন্ডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের পারমাণবিক নীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ অঙ্কিত পাণ্ডে বলেন, "মনে হচ্ছে তারা বলতে চাইছে যে ভূমি থেকে আকাশে ছোড়া এই নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি পঙ্গি-৫ (Pongae-5) ক্ষেপনাস্ত্রের চাইতে আরও বেশি শক্তিশালী। পঙ্গি-৫ ক্ষেপনাস্ত্রে কিছু সমস্যা ছিল।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পঙ্গি-৫ ‘এর মধ্যে "কিছু ত্রুটি" আছে বলে প্রথমে জানিয়েছিল কিন্তু তা কাটিয়ে ওঠে ২০১৭ সালে তারা এটিকে কার্যক্ষম বলে ঘোষণা করে। এই ক্ষেপনাস্ত্র একটি কল্পিত যুদ্ধের সময় দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমানের প্রতি চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করছে।
ব্যস্ততম মাস
রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম সর্বশেষ পরীক্ষা সম্পর্কে খুব কম তথ্য দিয়েছে। উত্তর কোরিয়ার উৎক্ষেপণের অত্যন্ত ব্যস্ততম মাসের শেষ দিনে এই চতুর্থ পরীক্ষার খবর দেয়া হয়।
সেপ্টেম্বরে উত্তর কোরিয়া যে পরীক্ষাগুলো চালিয়েছে তার মধ্যে একটি নতুন দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, একটি নতুন ট্রেন থেকে উৎক্ষেপণ করা স্বল্প পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং একটি নতুন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।
বেশিরভাগ পরীক্ষাগুলো দেখে মনে হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার লক্ষ্য হচ্ছে তাদের এই স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রকে যেন শনাক্ত এবং আটকানো না যায় সেই চেষ্টাই করা। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাও পুনরায় শুরু করতে পারেন, যা ২০১৭ সালের পর করা হয়নি।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উত্তর কোরিয়াকে স্বল্প বা দূরপাল্লার কোনো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের কার্যকলাপ চালানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উত্তরের স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে তেমন গুরুত্ব দেননি।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অধীনে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বারবার বলেছেন যে তারা উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য "যে কোন জায়গায়, যে কোন সময়" যেতে ইচ্ছুক। যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক আলোচনা ২০১৯ সাল থেকে থমকে আছে।