অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

কক্সবাজার  ক্যাম্পে প্রতিপক্ষ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ৭ রোহিঙ্গা নিহত


ফাইল ছবি-মানুষ বাংলাদেশের কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে সবজি কেনাকাটা করছে। ২ জুন ২০২০। (ছবি-এপি/শফিকুর রহমান)
ফাইল ছবি-মানুষ বাংলাদেশের কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে সবজি কেনাকাটা করছে। ২ জুন ২০২০। (ছবি-এপি/শফিকুর রহমান)

বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের কক্সবাজার জেলার উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শুক্রবার ভোরে প্রতিপক্ষ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ৭ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন বা এপিবিএন এর অধিনায়ক শিহাব কায়সার খান গণমাধ্যমকে ৭ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।এ ঘটনায় আহত ৪ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শিহাব কায়সার সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন আজ ভোর ৪টার দিকে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ১৮ নম্বর ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন ক্যাম্পে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলার সাথে জড়িত মুজিবুর রহমান নামে একজনকে একটি ওয়ান শুটারগান, ৬ রাউন্ড গুলি ও একটি ছুরি সহ আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এপিবিএন। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

সংবাদ মাধ্যমের খবরে নিহত ৭ জন রোহিঙ্গার নাম প্রকাশ করা হয়েছে যারা হলেন উখিয়ার বালুখালী ২ নম্বর ক্যাম্পের মোহাম্মদ ইদ্রিস (৩২), বালুখালী ১ নম্বর ক্যাম্পের ইব্রাহীম হোসেন (২২), বালুখালী ১৮ নম্বর ক্যাম্পের এইচ ব্লকের আজিজুল হক (২৬) ও মোহাম্মদ আমিন (৩২), রোহিঙ্গা শিবিরের ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়া’ মাদ্রাসার শিক্ষক ও ক্যাম্প-১৮, ব্লক-এফ-২২–এর নুর আলম ওরফে হালিম (৪৫),মাদ্রাসাশিক্ষক ও ক্যাম্প-২৪–এর হামিদুল্লাহ (৫৫) ও মাদ্রাসাছাত্র ও ক্যাম্প-১৮, ব্লক- এইচ- ৫২-এর নুর কায়সার(১৫)।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির, কক্সবাজারের এই ক্যাম্পগুলোতে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেগুলোকে ‘রোহিঙ্গা ডাকাত’ বা ‘চোরা কারবারিদের’ কাজ বলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। গত ২৯শে সেপ্টেম্বর রাতে কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে। তিনি আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস নামের একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন। ওই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অস্থিরতা দেখা দেয়। মুহিবুল্লাহর পরিবারের অভিযোগ প্রত্যাবাসনের পক্ষে জনমত গঠনে কাজ করা করায় মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা তাঁকে হত্যা করেছে।

এদিকে, সিলেটে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের এক অনুষ্ঠান শেষে শুক্রবার ভোরে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিপক্ষ দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে হতাহতের ঘটনা সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন 'রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অনেকটা অগ্রগতি হলেও কিছু লোক চায় না তারা নিজ দেশে ফেরত যাক’।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন অনেক রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফেরত যেতে চায় না কারণ এতে তাঁদের স্বার্থে আঘাত লাগে। তাঁরাই হয়ত এসব অঘটন ঘটাচ্ছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন বিষয়টি যেহেতু তাঁর সঠিক ভাবে জানা নাই তাই এটা জানতে হবে। আব্দুল মোমেন বলেন বিভিন্ন সূত্র থেকে যে খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে মাদকের ও অস্ত্রের ব্যবসা করছে অনেকে।সব নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করে বলেন এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে সরকার। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে ও বাইরে আইন-শৃঙ্খলা উন্নয়নের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সব বন্ধ করতে সরকার কঠোর হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

XS
SM
MD
LG