আফগানিস্তানে জন্মগ্রহণকারী বা বসবাসকারী প্রায় ২০০০ জাতিগত উইঘুর, তালিবান ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সংকটের মধ্যে পড়েছে। অনেকে আশঙ্কা করছে যে তাদের চীনে ফেরত পাঠানো হবে এবং তারা জিনজিয়াং অন্তরীণ শিবিরে আনুমানিক ১০ লক্ষ উইঘুরের সাথে যোগ দেবে। এই তথ্য জানিয়েছেন আফগান উইঘুর, যারা ভয়েস অফ আমেরিকার কাছে তাদের উদ্বেগের কথা বলেছেন। বিশেষ করে যখন তাঁরা দেখছেন যে তালিবান এবং চীনা কর্মকর্তারা সহযোগিতার সম্ভাব্য পথ খুঁজছে।
কাবুলের উইঘুর গয়না ব্যবসায়ী এবং পাঁচ সন্তানের জনক মেমেট ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, তিনি তার জীবনে এত বেশি ভীত আর কখনও হননি। তার বিশ্বাস, তালিবান, যাদের চরম ভাবে অর্থনৈতিক সহায়তার প্রয়োজন, তারা চীনের আর্থিক সাহায্যের জন্য তার এবং তার পরিবারের মত লোকদের বিনিময় করতে দ্বিধা করবে না।
"আমি সবচেয়ে ভীত যে তালিবান শেষ পর্যন্ত আমাদেরকে চীনে ফিরিয়ে দেবে, এবং চীন আমাদের গুলি করে মারবে," মেমেট, যিনি কেবল তার প্রথম নাম প্রকাশ করতে সন্মত হন, তিনি বলে্ন, তিনি আফগানিস্তানে জন্মগ্রহণ করেছেন, এবং নির্বাসিত উইঘুর পিতামাতার পুত্র, যারা ১৯৬১ সালে চীনের স্বশাসিত অঞ্চল জিনজিয়াং থেকে আফগানিস্তানে এসেছিলেন।
চীন সরকারের মতে, আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী জিনজিয়াংয়ে ১৪০ লক্ষের বেশি উইঘুর বাস করে। চীন-তালিবান সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে গত মাসে যখন তিয়ানজিনে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তালিবানের একটি প্রতিনিধিদল বৈঠক করেছিল, তখন চীন আফগানিস্তানে চরমপন্থী ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট বা ইটিআইএম মোকাবেলায় তালিবানের সহযোগিতা চেয়েছিল।
তালিবান পুনর্ব্যক্ত করেছে যে তারা কখনোই কোনো শক্তিকে আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবে না যা চীনের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ইটিআইএম, জাতিসংঘ চিহ্নিত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন যা চীনের বাইরে উইঘুর জঙ্গিদের সাথে যুক্ত। যুক্তরাষ্ট্র ২০২০ সালে এ দলটিকে তাদের সন্ত্রাস তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে এই বলে যে, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের "কোন বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই"।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক অক্সাস সোসাইটি ফর সেন্ট্রাল এশিয়ান অ্যাফেয়ার্সের বিশ্লেষক ব্র্যাডলি জার্ডিনের মতে, আফগান উইঘুরদের চীনে ফেরত পাঠানোর ভয় ভিত্তিহীন নয়। জার্ডিন ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, " এর আগেও উইঘুরদের নির্বাসন তালিবানের অধীনে ঘটেছে, ২০০০ সালে পাকিস্তানে চীনের রাষ্ট্রদূত লু শুলিন এবং কান্দাহারের তালেবান নেতা মোল্লা ওমরের মধ্যে বৈঠকের পর ১৩ জন উইঘুর চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল।"