করোনার ভয়াবহতা নিয়ে কোনো সতর্ক বার্তাই সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছে না। ফেরি ঘাটে বিজিবি মোতায়েন করেও জনস্রোত আটকানো যায়নি। অবস্থা এখন স্বাভাবিকের চেয়েও স্বাভাবিক। হাজার হাজার মানুষ ফেরি ঘাটগুলোতে জমায়েত হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাশের দেশ ভারত তছনছ হয়ে গেছে। যেকোনো সময় এদিকেও হানা দিতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সতর্ক করেছেন। বলেছেন, যে যেখানে আছেন সেখানেই ঈদ পালন করুন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, করোনা মহামারিতে ভারতের ফুটপাতও এখন শ্মশান ঘাটে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে গোটা ভারত। এই অবস্থায় আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। সামান্যতম উদাসিনতা বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশে দেশে এখন করোনার তাণ্ডব চলছে। তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশ অনেকটাই নিরাপদ আছে। সংক্রমণ কমছে। হাসপাতালে তেমন চাপ নেই। তারপরও স্বস্তি নেই স্বাস্থ্য দপ্তরে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সতর্ক হোন, নিজেরা বিপদ ডেকে আনবেন না।
ভ্যাকসিন স্বল্পতা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদেরকে ভাবনার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট ভ্যাকসিন সরবরাহে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা এখন জুলাই মাসেও সাপ্লাই দিতে পারবে কিনা এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, টিকা না দেয়ায় সেরাম ইন্সটিটিউটের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া যায় কিনা তা ভেবে দেখতে বলেছে পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
করোনা মহামারিতে কাবু নেপালের সঙ্গে সব ধরনের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। নেপালকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় রাখা হয়েছে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো হচ্ছে- ভারত, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, সাইপ্রাস, জর্জিয়া, ইরান, মঙ্গোলিয়া, ওমান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তিউনেশিয়া। এই মুহূর্তে ৩৯টি দেশের সঙ্গে সব রকমের যোগাযোগ বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে আরও ১৪ দিন সীমান্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথম দফায় ১৪ দিন বন্ধ ছিল। আকাশ পথেও কোনো যোগাযোগ নেই।
ওদিকে গত দু'দিনের তুলনায় বাংলাদেশে মৃত্যু বেড়েছে। ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৫৬ জন। আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৩৮৬ জন। ঢাকা থেকে মতিউর রহমান চৌধুরী