কংগ্রেস সম্পর্কে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা প্রায়ই বলেন, ওটা তো একটা পরিবারের পার্টি! আবার অনেক কংগ্রেসি মনে করেন, আপামর কর্মীদের আবেগের চুম্বকই গান্ধী পরিবার। এদিকে নেহরু-গান্ধী পরিবার থেকে আসা কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন সোনিয়া গান্ধী।
১৯৯৮ সালের মার্চে সোনিয়া কংগ্রেস সভানেত্রী হয়েছিলেন। মাঝে রাহুল গান্ধীর দুবছর বাদ দিলে প্রায় তাঁর নেতৃত্ব একুশ বছর হয়ে গেল। এই রেকর্ড আর কারও নেই।
১৯৩০ থেকে ১৯৫৪ পর্যন্ত জওহরলাল নেহরু কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন সব মিলিয়ে আট বছর। সভাপতি হিসেবে তাঁর কার্যকাল ছিল খাপছাড়া। কখনও এক বছর, কখনও তিন বছর। দলের সভাপতি হিসেবে ধারাবাহিকতা ছিল না স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর।
ইন্দিরা গান্ধী প্রথম পার্টি প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন ১৯৫৯ সালে, এক বছরের জন্য। তারপর আবার তিনি ওই দায়িত্বে ফেরেন ১৯৭৮ সালে। ছিলেন আমৃত্যু, ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত। রাজীব গান্ধী কংগ্রেস সভাপতি পদে ছিলেন ১৯৮৫ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত। রাহুল গান্ধী ২০১৭ সালে কংগ্রেস সভাপতি হন। তারপর উনিশের ভোটে ব্যাপক ভরাডুবির পর পরাজয়ের দায় নিয়ে কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। সেই থেকে ফের কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়াই।
অনেকের মতে, গান্ধী পরিবারের প্রতি আগে শীর্ষ নেতাদের যে সম্ভ্রম প্রদর্শনের বিষয় ছিল তা এখন নেই। সারা দেশে যখন গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি ভাঙছে, সাংগঠনিক কাঠামো বিপন্ন তখন সোনিয়ার বিরুদ্ধাচারণ করেছেন কপিল সিব্বল, গুলাম নবি আজাদ, শশী তারুররা। সোনিয়ার বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তা-সহ একাধিক অভিযোগ তোলার পাশাপাশি গ্রুপ-২৩ নেতাদের আপত্তি কেন কংগ্রেসের ব্যাটন বছরের পর বছর একটা পরিবারের চৌহদ্দিতেই থাকবে।
এমনিতে কোনও দেশেই জাতীয় স্তরের গণতান্ত্রিক দলগুলির ক্ষেত্রে এই ধরনের পারিবারিক আধিপত্যবাদ দেখা যায় না। যদিও ভারতে আঞ্চলিক দলগুলির ক্ষেত্রে তা এক নয়। লালুপ্রসাদ, মায়াবতীরা বছরের পর বছর ধরে দলের কতৃত্ব নিজেদের হাতে রেখেছেন। মুলায়ম সিং যাদবের পর সমাজবাদী পার্টির প্রধান তাঁর পুত্র অখিলেশ। ওদিকে করুণানিধির মৃত্যুর পর তামিল রাজনীতিতে ডিএমকে-র ব্যাটন ছেলে স্ট্যালিনের হাতেই।