অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

পিনু রহমানের ক্যামেরায় "লস্ট চাইল্ডহুড"

সম্প্রতি, প্যারিস আলোকচিত্র পুরস্কার (Prix De la Photigraphie) বা PX 3 এর ২০২১ এর আসরের “The State of the World” নামে পরিচিত বিশেষ বিভাগে কিউরেটর নির্বাচিত ৩০টি শক্তিশালী ফটোস্টোরীর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে শিশু শ্রমের বিষাদময় দিক নিয়ে তোলা পিনু রহমানের "লস্ট চাইল্ডহুড" শিরোনামে তোলা ১১টা ছবির একটি গল্প।

প্যারিসের Escape Beaurepaire আর্ট গ্যালারীতে ২৫ অক্টোবর প্রদর্শীত হবে নির্বাচিত ৩০টি ছবির গল্পগুলো। এর আগে, পিনু রহমান ২০১৯ সালে প্রথমবারের মত আলোকচিত্রের বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে "বেস্ট অব ন্যাশন পুরস্কার" পেয়েছিলেন রিপোর্টেজ ক্যাটেগরীতে। পিনুর সেই সিঙ্গেল ছবিরও নাম ছিলো "লস্ট চাইল্ডহুড"।

ছবির শিরোনাম "লস্ট চাইল্ডহুড" কেন, প্রশ্নের উত্তরে পিনু রহমান জানান, “আমি মূলত ব্যাংকে কাজ করি। শুক্র ও শনিবারের সাথে সরকারি ছুটির দিনগুলি পাই নিজের জন্য। পারিবারিক কাজ সামলে মাঝেমাঝে সুযোগ আসলে ক্যামেরা হাতে বেড়িয়ে পড়ি। গন্তব্য কখনও আগে ঠিক করে নেই, কখনও পথে নেমে ঠিক করি। বুড়িগঙ্গা নদীর উপারে কেরানীগঞ্জ। সেখানেই নদীর তীর ঘেঁষে অনেকগুলি ডকইয়ার্ড গড়ে উঠেছে। ২০১৮ সালের এক ছুটির দিনে ছবি তোলার উদ্দেশ্যে সেখানে চলে যাই।

সেখানে গিয়ে দেখি সবগুলি ডকইয়ার্ডে প্রচুর শিশু শ্রমিক। বেশিরভাগের বয়স ৭ থেকে ১৫ বছর। লোহা ও আগুনের কাজ। পরিশ্রমের তো অবশ্যই, ঝুঁকিরও শেষ নেই এসব কাজে। দিনের পারিশ্রমিক দিনে আবার মাসিক চুক্তিতেও কাজ করে অনেক শিশু কিশোর। প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিকদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে। মনটা খারাপ হয়ে যায়। বিষণ্ণ মনে ওদের ছবিগুলি তুললাম । এক দিনে সব ছবি পেলাম না। আরও কয়েকবার যেতে হয়েছে ছবি তুলতে। ছবি তুলতে তুলতে ভাবলাম এই বয়স তো ওদের স্কুলে যাবার, মাঠে খেলাধূলা করার অথচ দিন নেই, রাত নেই, ছুটি নেই, বিশ্রাম নেই। মাসের প্রায় ৩০ দিনই ওরা কাজ করে। বাল্যকাল থেকে ওদের ছিটকে পড়ার কারণেই আমার এই প্রজেক্টের নাম দেই “লস্ট চাইল্ডহুড”।"


XS
SM
MD
LG