মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বিকৃত করে সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করে গ্রেফতার হয়েছিলেন রাজ্যের হাওড়া জেলার বিজেপি নেত্রী প্রিয়ঙ্কা শর্মা। এ বার তাঁকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে নির্দেশ দেশের দিল শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি— ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সঞ্জীব খন্না স্পষ্ট করে দেন, বাকস্বাধীনতার অধিকার তত ক্ষণই থাকে যতক্ষণ না তা অন্য কাউকে আঘাত করে।
কলকাতা থেকে বিস্তারিত জানিয়েছেন পরমাশিষ ঘোষ রায়।
প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে গত শুক্রবার বিজেপি-র যুব মোর্চার নেত্রী রাজ্যের হাওড়া জেলার দাশনগরের বাসিন্দা প্রিয়ঙ্কা শর্মাকে হাওড়া কমিশনারেটের পুলিশ গ্রেফতার করে। হাওড়ার এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অভিযোগ করেছিলেন যে, প্রিয়ঙ্কা শর্মা তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি ছবি পোস্ট করেছেন। সেই ছবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বিকৃত করে প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার সাম্প্রতিক মেটা-গালা অনুষ্ঠানের পোশাকে দেখানো হয়েছে। এরপরই প্রিয়ঙ্কা শর্মাকে গ্রেফতার করে হাওড়া জেলা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এই ঘটনায় প্রিয়ঙ্কা শর্মার বাবা রাজীব শর্মা সোজা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। গতকাল সোমবারই প্রিয়ঙ্কার মামলা সুপ্রিম কোর্ট গ্রহণ করে। আজ মঙ্গলবারই শুরু হয় শুনানি। প্রিয়ঙ্কার আইনজীবী অমিত আগরওয়াল এবং এন কে কলের সওয়াল শুনে দুই বিচারপতি বলেন, ‘‘প্রিয়ঙ্কাকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে। যদি কারও কোনও বক্তব্য অন্য কারও ভাবাবেগে আঘাত করে সেখানে তা অপরাধ।” বিচারপতিরা উল্লেখ করেন যে, প্রিয়ঙ্কা এক জন রাজনৈতিক কর্মী। তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির নেত্রী। সে ক্ষেত্রে তাঁর এ ধরনের পোষ্ট ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষত যখন দেশে নির্বাচন চলছে। দুই বিচারপতি প্রথমে প্রিয়ঙ্কার জামিনের পূর্ব শর্ত হিসাবে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেন। অর্থাৎ ক্ষমা চাইলে তবেই মিলবে জামিন। পরে অবশ্য ফের তাঁরা প্রিয়ঙ্কার আইনজীবী এন কে কল-কে ডেকে পাঠিয়ে নির্দেশ বদল করে প্রিয়ঙ্কার জামিন মঞ্জুর করেন। তবে সঙ্গে ক্ষমা চাওয়ারও নির্দেশ দেন।