সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত অতিক্রম করে আসা আটককৃত অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছে ১৮ হাজার অভিভাবকহীন শিশু কিশোর। আর অভিবাসন বিষয়ক নানা সমস্যার মধ্যে এই বিষয়টি এখন বাইডেন প্রশাসনের প্রাথমিক মাথা বাথার কারণ হয়ে উঠেছে।যুক্তরাষ্ট্র মেক্সিকো সীমান্তে সম্প্রতি অভিবাসীর সংখ্যা বাড়ার কারণ কি, এই প্রশ্নে এখন অনেকেই দায়ী করছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। কেন, সে প্রশ্নের রয়েছে মিশ্র উত্তর।
সাম্প্রতিক এবিসি নিউজ / ইপসোস জরিপে, জরিপকৃতদের মধ্যে পঁচাশি শতাংশ বলেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন পরিস্থিতি যেভাবে মোকাবেলা করছেন তা সঠিক নয়।
যদিও বাইডেন অভিবাসন প্রত্যাশীদের তাদের বাড়িতে থাকার অনুরোধ করেছেন, অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার চেষ্টা না করতে বলেছেন, তবু সমালোচকরা বলছেন অভিবাসন নীতিমালা পরিবর্তন করায় হাজার হাজার মানুষ বিপজ্জনক পথে যাত্রার চেষ্টা করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে আসার স্বপ্নে।
এছাড়া বাইডেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে সীমানা প্রাচীরের পক্ষে ছিলেন তা বাতিল করেছেন এবং বলেছেন মানবিক অভিবাসন নীতির কথা।
ট্রাম্প আমলেও গত এপ্রিলে অভিবাসীদের বড় প্রবাহ শুরু হয়েছিল, তবে বাইডেনের অধীনে সেই সংখ্যা অনেক বেড়েছে।
উভয় দলের বেশ কিছু আইন প্রণেতা নিজের চোখে সীমান্ত পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছেন।
রিপাবলিকান সেনেটর ডান সুলিভান, তাঁদের একজন, "আমার কাছে এটি ছিল অবাক করার মতো বিষয়। আমি মনে করি প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টকে সেখানে গিয়ে নিজেদের চোখে সেখানকার অবস্থা দেখতে হবে; আমি ও অন্যান্য রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যানরা সেখানকার অবস্থা দেখেছি। পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্যে তাত্ক্ষণিকভাবে কিছু কাজ করা দরকার। কারণ এটি উন্মুক্ত সীমানা। সেখানে মানবিক এবং স্বাস্থ্য সঙ্কটও রয়েছে যা আমাদের সমাধান করা উচিত।"
বাইডেন প্রশাসন বলছে সীমান্ত উন্মুক্ত নয় এবং যারা আসার চেষ্টা করছে তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে সত্যিকার অর্থে বিপুল সংখ্যক অভিবাসীর আগমন ঘটছে, সীমান্তে তারা রক্ষীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি করছে, প্রতিদিনই তাদের সংখ্যা বাড়ছে।
হোয়াইট হাউস যোগাযোগ পরিচালক কেট বেডিংফিল্ড বলেন, "এটি এই প্রশাসনের নীতি বা অন্য প্রশাসনের নীতিমালার কারণে নয়; এই সমস্যা ওইসব অঞ্চলের আবহাওয়া বিপর্যয় সহ নানা কারণে হচ্ছে। তারা দারিদ্র্য ও সহিংসতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসার চেষ্টা করছে”।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন; ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে অভিবাসন সমস্যা নিরসনের জন্য প্রধান করেছেন। অভিবাসন প্রত্যাশীদের অনুপ্রবেশ, শরণার্থী আশ্রয়প্রার্থী নানা বিষয়ের নেতৃত্ব দেবেন তিনি।
তবে সীমান্ত রক্ষীদের হেফাজতে থাকা অভিভাবকহীন শিশুদের জন্য নয়টি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেছে বাইডেন প্রশাসন। ওইসব শিশুদের ৮০ শতাংশেরও বেশির পরিবারের সদস্য রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। পরিবারের সদস্য বলতে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে তাদের মধ্যে ৪০ শতাংশেরও বেশি শিশুর পিতামাতা।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছিলেন, শেষ সমাধান হচ্ছে হন্ডুরাস, গুয়াতেমালা এবং এল সালভাদোরের মতো দেশগুলির সাথে আলোচনা করা যাতে সেখানকার লোকদের মনে হয় না যে যুক্তরাষ্ট্রে আসার জন্য বাড়ি ছেড়ে চলে আসা সঠিক কাজ। তবে এতে অনেক সময় লাগবে।
মিশেল কুইনের প্রতিবেদন থেকে সেলিম হোসেন, ভিওএ নিউজ