অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা কাশ্মীর ত্যাগ করছেন


ফাইল ছবি- ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগরে সন্দেহভাজন ভারতবিরোধী বন্দুকধারীদের হাতে নিহত স্থানীয় পণ্ডিত ব্যবসায়ীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া একটি পরিবার জানালা দিয়ে দেখছে। ৬ অক্টোবর ২০২১। (ছবি-এএফপি/তউসিফ মুস্তাফা)
ফাইল ছবি- ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগরে সন্দেহভাজন ভারতবিরোধী বন্দুকধারীদের হাতে নিহত স্থানীয় পণ্ডিত ব্যবসায়ীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া একটি পরিবার জানালা দিয়ে দেখছে। ৬ অক্টোবর ২০২১। (ছবি-এএফপি/তউসিফ মুস্তাফা)

এই মাসে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে জঙ্গিরা বেসামরিক নাগরিকদের ধারাবাহিকভাবে হত্যা করার ফলে ঐ অঞ্চলের কিছু হিন্দু সংখ্যালঘু সদস্যরা তাদের সম্প্রদায়ের উপর আরও হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কা করে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। সেখানকার কয়েকজন বাসিন্দা ভিওএকে এমন কথা বলেছেন।

২৪ বছর বয়সী অভয় কৌল বলেন,"যারা বলে ৪ঠা অক্টোবরের পর আমাদের মধ্যে থেকে কেউ [কাশ্মীর] ছাড়েনি তারা মিথ্যা বলছে।" অভয় যে তারিখের কথা বলছেন ঐ তারিখে তার কথামতে কিছু পরিবার, বুদগাম জেলার শেখপুরা পাড়ায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের আবাসস্থল যা পণ্ডিত নামে পরিচিত, ছেড়ে যেতে শুরু করে।তিনি ভারতীয় পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনীর পাহারায় একটি গেট দিয়ে ঐ এলাকায় প্রবেশ করার জন্য যখন অপেক্ষা করছিলেন সে সময় এই কথা বলেন।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ২রা অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত জঙ্গিদের গুলিতে ১১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেন দুজন পণ্ডিত, চারজন কাশ্মীরের হিন্দু অভিবাসী শ্রমিক, একজন সংখ্যালঘু শিখ, একজন মুসলিম অভিবাসী শ্রমিক এবং তিনজন স্থানীয় মুসলমান।

পাকিস্তান ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার একটি সংগঠন বলে মনে করা হয় এমন একটি ইসলামী জঙ্গি সংগঠন দ্য রেজিস্টেন্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) বেশিরভাগ হামলার দায় স্বীকার করেছে।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে যে টিআরএফ সামাজিক মাধ্যমে এক মিডিয়া পোস্টে দাবি করেছে যে তারা এসব হামলা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের জন্য কাজ করা লোকদের লক্ষ্য করে করছে। খবরে বলা হয়েছে যে দলটির বক্তব্য নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

কৌল বলেন, লক্ষ্য স্থির করে হত্যাকাণ্ডগুলোর পর পণ্ডিত চত্বরের ভেতরের অধিকাংশ অ্যাপার্টমেন্ট খালি হয়ে যায়।

কৌল বলেন, "মারা যাওয়ার ভয়ে পণ্ডিতরা অন্যত্র চলে যাওয়ার পরিকল্পনা শুরু করেছে।" তিনি বলেন,“৮ থেকে ৯ অক্টোবরের রাতের মধ্যে শেখপুরার ভিতরে বসবাসকারী পঞ্চাশ থেকে ৬০টি পণ্ডিত পরিবার তাদের আসবাবপত্র নিয়ে কাশ্মীর উপত্যকা ছেড়ে চলে যায়। আমার ভবনে কেবল আমার পরিবারই রয়েছে।”

কৌল উল্লেখ করেন যে তার পরিবার সেই কয়েকটি পরিবারের মধ্যে একটি ছিল যারা ১৯৯০ এর দশক থেকে এই অঙ্গনে বসবাস করে আসছে যখন কাশ্মীরে সাম্প্রদায়িক সংঘাত চরমে ছিল।

তাঁর পরিবার সেই কয়েকজন পণ্ডিতদের মধ্যে ছিল যারা ১৯৯০ এর-এর দশক থেকে পুলওয়ামা জেলায় মুসলমানদের সঙ্গে বসবাস করেছেন। সেই সময় ঐ অঞ্চলে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল।

বাইরের লোকেরা ঐ এলাকাটিতে প্রবেশ করতে পারবেনা।ভিওএ প্রবেশের জন্য অনুমতি চাইলে কর্তব্যরত পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনী "নিরাপত্তার" কারণ দেখিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে।

(এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এসোসিয়েটেড প্রেস থেকে নেয়া হয়েছে)

XS
SM
MD
LG