অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ফেসবুকে রোহিঙ্গা গণহত্যার কনটেন্ট প্রকাশে মার্কিন আদালতের রায়কে বাংলাদেশ ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে


ভাসান চর দ্বীপে যাওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের দক্ষিণ -পূর্ব বন্দর শহর চট্টগ্রাম থেকে নৌবাহিনীর জাহাজে ওঠার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১।
ভাসান চর দ্বীপে যাওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের দক্ষিণ -পূর্ব বন্দর শহর চট্টগ্রাম থেকে নৌবাহিনীর জাহাজে ওঠার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রোহিঙ্গা গণহত্যা সম্পর্কিত সব কনটেন্ট প্রকাশে মার্কিন আদালতের রায়কে বাংলাদেশ ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এক সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ন্যায় বিচারের পথে এই রায় এক উৎসাহজনক অগ্রগতি।

উল্লেখ্য যে, ২০১৭ সালে সংগঠিত এই গণহত্যার পর প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এই রায়ের পর ফেসবুক কি করবে এখনো স্পষ্ট নয়।তবে প্রতিষ্ঠানটির একটি বিবৃতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই বিবৃতিতে বলা হয়- আমরা আদালতের এ রায় পর্যালোচনা করে দেখছি। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর যে নৃশংসতা চালানো হয়েছে তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা বরাবরই আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারের পক্ষে। এই ঘটনার প্রাসঙ্গিক তথ্য কর্তৃপক্ষেরকাছে প্রকাশ করার ব্যাপারে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আইন অনুসরণ করেইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ ম্যাকানিজম ফর মিয়ানমার (আইআইএমএম)-এর কাছে এসব তথ্য প্রকাশ করেছি। ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।

বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে ফেডারেল আদালতের বিচারক জিয়া এম ফারুকী এই যুগান্তকারী রায় দেন। আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বা আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ এনেছে। এই অভিযোগ তদন্তে ফেসবুকের এসব কনটেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান বিচারক এম ফারুকী। গাম্বিয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে ফেডারেল আদালত এই আদেশ দেয়। রায়ে বলা হয়- ফেসবুক স্বীকার করেছে যে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশের অংশ হিসেবে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষফেসবুক ব্যবহার করেছে।

২০১৮ সনে মিয়ানমার সরকারের এজেন্টদের একাউন্ট ও তাদের প্রকাশিত কনটেন্টগুলো মুছে ফেলতে শুরু করে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, গণহত্যায় ইন্ধন জোগানো ওইসব কনটেন্ট মুছে ফেলেছিল ফেসবুক। তবে এখন তাদেরকে পরবর্তী ধাপে এই কনটেন্টগুলো প্রকাশ করতে হবে। ৩২ পাতার ওই রায়ে আরও বলা হয়, ফেসবুক তখন এই কনটেন্টগুলো শেয়ার করেনি। কিন্তু, এখন সে সুযোগ তৈরি হয়েছে। তারা যদি এ সময় সব কনটেন্ট শেয়ার করতে না চায় বা না করে তাহলে রোহিঙ্গাদের ট্রাজেডিকে আরও বাড়িয়ে দেবে। ঐতিহাসিক এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন ওয়াশিংটনভিত্তিক অ্যাটর্নি পল রেচলার। তিনি পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন।

আদালতে তিনি বলেন, ফেসবুক রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণে সহায়তা করেছে। শুধু তাই নয়, ফেসবুক ছিল এর প্রধান হাতিয়ার। এই ঘটনায় রেচলার প্রচণ্ড হতাশা ব্যক্ত করেন। বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য ফেসবুক স্বেচ্ছায় এই কনটেন্টগুলো উপস্থাপন করেনি।

তিনি বলেন, এই রায় ফেসবুক থেকে মুছে ফেলা তথ্যগুলো পাওয়ার সুযোগ করে দেবে। স্মরণ করা যায় যে, হেগে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ১৭ জন বিচারকের একটি প্যানেল থেকে মিয়ানমারকে গণহত্যার প্রমাণ বিনষ্ট না করার নির্দেশনা দেয়া হয়।

XS
SM
MD
LG