অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাস্তুচ্যুত ৮৬ শতাংশ মানুষের আশ্রয়স্থল উন্নয়নশীল দেশসমূহঃ জাতিসংঘ


বাস্তুচ্যুত ৮৬ শতাংশ মানুষের আশ্রয়স্থল উন্নয়নশীল দেশসমূহঃ জাতিসংঘ
বাস্তুচ্যুত ৮৬ শতাংশ মানুষের আশ্রয়স্থল উন্নয়নশীল দেশসমূহঃ জাতিসংঘ

আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবস। জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী ২০০১ সাল থেকে প্রতি বছর দিনটি পালিত হয় এক একটি প্রতিপাদ্য ধরে। এ বছরের বিশ্ব শরণার্থী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘একসঙ্গে সংকটের সমাধান, উন্নয়নের অগ্রযাত্রা’।

আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবস। জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী ২০০১ সাল থেকে প্রতি বছর দিনটি পালিত হয় এক একটি প্রতিপাদ্য ধরে। এ বছরের বিশ্ব শরণার্থী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘একসঙ্গে সংকটের সমাধান, উন্নয়নের অগ্রযাত্রা’।

করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণ এবং এই মহামারিতে সৃষ্ট বিভিন্ন বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলার জন্যে এবার এই থিম নির্ধারণ করা হয়েছে। এই মুহূর্তে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক শতাংশ শরণার্থী; অর্থাৎ প্রায় আট কোটি। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেন থেকে।

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বিশ্বের মোট শরণার্থীর বিশাল একটি অংশ, যাঁদের বেশিরভাগের আশ্রয় হয়েছে বাংলাদেশের কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে ২০২০ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বজুড়ে নিজ বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষের সংখ্যা ছিল ৮২.৪ মিলিয়ন বা ৮ কোটি ২৪ লক্ষ, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ রেকর্ড।

এ বছরের বিশ্ব শরণার্থী দিবসের আগে জাতিসংঘের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয় করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে চলাফেরায় নানা সীমাবদ্ধতা ও নিষেধাজ্ঞা এবং বিভিন্ন সীমান্ত বন্ধের পরও শরণার্থীর সংখ্যা বেড়েছে।

গিলিয়ান ট্রিগস হলেন ইউএন শরণার্থী এজেন্সি (ইউএনএইচসিআর) সুরক্ষা বিষয়ক সহকারী হাই কমিশনার। তাঁর মতে, "দুঃখের বিষয়টি হচ্ছে গত দশ বছরে শরণার্থী বা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। এর মধ্যে ৪৮ শতাংশ শিশু বা যুবক। ফলে আমরা দেখছি শিশুদের বিশাল প্রজন্ম তাদের জন্মস্থান থেকে পৃথক হয়েছে”।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামগ্রিকভাবে, ৯৫ জনের মধ্যে ১ জন দেশের ভেতরে এবং বাইরে, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত। এর মধ্যে রয়েছেন সিরিয়ার অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যা। আন্তর্জাতিকভাবে সিরিয়ানরা এই বাস্তুচ্যুতদের বৃহত্তম গ্রুপের প্রতিনিধিত্ব করে এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে তাদের প্রয়োজনীয়তার শেষ নেই।

ন্যান্সি ইয়ারমাউট রেস্কিউ মি নামের একটি সংগঠনে লেবাননের সিরিয় শরণার্থীদের সাথে কাজ করছেন। তিনি বলেন, "আমি আপনাকে শিক্ষার বিষয়ে বলতে চাই, শিক্ষাকে আলাদা করা ঠিক হবে না। মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে শিক্ষাকে যুক্ত করা দরকার। কারণ বহু ভীত সন্ত্রস্ত্র সিরিয়ান শরণার্থী রয়েছেন। তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা দরকার"।

বাস্তুচ্যুত মানুষের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রুপ হচ্ছেন ভেনিজুয়েলায়ানরা। তাঁদের অনেকেই পালিয়ে গেছেন প্রতিবেশী কলম্বিয়ায়। এবং মধ্য আমেরিকা গত দশ বছরে স্থানচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৫০ গুণ বেড়েছে, অনেক শরণার্থী উত্তর আমেরিকা অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের দিকে এসেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরে জনসংখ্যা, শরণার্থী এবং অভিবাসন ব্যুরোর কর্মকর্তা রিচার্ড অ্যালব্রাইটের মতে, "আমি মনে করি শরণার্থীদের সম্পর্কে কেবল একটি সমাজের বোঝা হিসাবে নয় বরং তাদেরকে ভোক্তা এবং অবদানকারী হিসাবে ভাবা গুরুত্বপূর্ণ; কারণ তারা বাস্তবে অর্থনৈতিক বিকাশে যুক্ত হয়েছেন।"

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে অভিভাবকহীন শিশুর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। এবং জলবায়ু পরিবর্তন অভিবাসনকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে; বাড়িয়েছে অস্থিরতা; বিশেষ করে যারা ইতিমধ্যেই বাস্তচুত তাঁদেরকে।

গিলিয়ান ট্রিগস, ইউএনএইচসিআর সহকারী হাই কমিশনার, "সম্পদ, পানি, জমি অর্থাৎ পশু পালন এবং শস্য উতপাদনের ক্ষমতা; এগুলি সবই জলবায়ু পরিবর্তনের দ্বারা প্রভাবিত এবং এসব সংঘাতের সৃষ্টি করে, আর সংঘাত ধাবিত করে বাস্তুচ্যুতির দিকে”।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে দেখা গেছে সীমান্ত পেরিয়ে বাস্তুচ্যুত হওয়া ৮৬ শতাংশ মানুষ আশ্রয় পেয়েছেন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে।

XS
SM
MD
LG