অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সাংবাদিক হত্যাকারীদের ৮০ শতাংশের বিচার হয় নাঃ সিপিজে রিপোর্ট


ফাইল ফটো- নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে সাংবাদিক পিটার আর ডি ভ্রিসকে যে স্থানে গুলি করা হয়েছিল সে স্থানে তাঁর একটি ছবিসহ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে৷৮ জুলাই ২০২১। (ফাইল ছবি-এপি/পিটার ডিজং)
ফাইল ফটো- নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে সাংবাদিক পিটার আর ডি ভ্রিসকে যে স্থানে গুলি করা হয়েছিল সে স্থানে তাঁর একটি ছবিসহ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে৷৮ জুলাই ২০২১। (ফাইল ছবি-এপি/পিটার ডিজং)

বৃহস্পতিবার কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট এর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে মুক্ত সংবাদ মাধ্যমের বিশেষজ্ঞরা বছরের পর বছর ধরে যে বিষয়ে জোর দিয়ে আসছেন, বেশিরভাগ সময় সাংবাদিকদের খুনিরা ছাড় পেয়ে যায় তার ওপর আবারও জোর দিয়েছে।

সিপিজে নথিভুক্ত করেছে যে গত এক দশকে, ২৭৮ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮১ শতাংশের ক্ষেত্রে, অপরাধের সঙ্গে জড়িত কাউকে কখনও দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি।

সিপিজের সহকারী নির্বাহী পরিচালক রবার্ট মাহোনি ভিওএকে বলেন, "এটি সাংবাদিকতার জন্য একটি ভয়ানক বার্তা কারণ যে কোনো সরকার, যে কোনো অপরাধী চক্র যারা একজন সাংবাদিকের কণ্ঠ রোধ করতে চায়, তা করার জন্য কয়েক হাজার ডলারের বিনিময়ে একজন গুপ্তঘাতককে নিয়োগ করতে পারে।"

এই বছরের সূচকে সাধারণত তালিকায় যে দেশগুলি থাকে — সোমালিয়া, সিরিয়া এবং ইরাক — সেই দেশগুলিকেই শীর্ষে দেখা যাচ্ছে যারা সাংবাদিকদের হত্যাকারীদের বিচার করে না ৷সবচেয়ে খারাপ পাঁচটি দেশ যুদ্ধ পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা মোকাবেলা করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সোমালিয়ায় গত এক দশকে বিভিন্ন কারণে সহিংসভাবে মারা যাওয়া আনুমানিক ৭০ জন সাংবাদিকের মধ্যে ২৫টি হত্যাকাণ্ডের কোন বিচার হয়নি।

আফগানিস্তানে বিপদ বাড়ছে

আফগানিস্তান তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছে। গত এক দশকে অন্তত ১৭জন সাংবাদিক হত্যার ঘটনা ঘটেছে যার বিচার হয়নি।এর মধ্যে অন্তত চারজন সাংবাদিক রয়েছেন যারা ভিওএর একটি সহযোগী সংস্থা রেডিও ফ্রি ইউরোপ /রেডিও লিবার্টির জন্য কাজ করছিলেন।

সিপিজে বলছে গত বছর থেকে দেশটি ক্রমশ আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। তালিবান নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সাংবাদিকরা অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছে।

'সাংবাদিকতায় ক্যান্সার'

মাহোনির মতে যেহেতু যারা সাংবাদিকদের হুমকি দেয় এবং হত্যা করে তাদের কদাচিৎ বিচার করা হয় সে কারণে সাংবাদিকদের মধ্যে ভয় রয়েছে এবং সংবাদ প্রকাশের সময় অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করে থাকেন। এমন কিছু লেখেন না যা তাদের হুমকির সম্মুখীন করবে। তিনি বলেন, "শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়া সাংবাদিকতার জন্য এক ধরণের ক্যান্সার। এটি সাংবাদিকদের অন্ধকার জগতের খবর প্রকাশ করা থেকে বিরত রাখে, তারা জীবনের ভয়ে থাকে।" তিনি বলেন "যতদিন একজন সাংবাদিকের খুনি ধরা না পড়ে, সে দেশের সাংবাদিকতা হুমকির মুখে রয়েছে।"

এক দশক আগে সিপিজে তার প্রথম বার্ষিক দায়মুক্তি সূচক প্রকাশ করার পর থেকে, শীর্ষস্থানীয় অনেক দেশের পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে মনে হয় না। কিন্তু সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রবক্তারা বলছেন যে যেসব দেশ খুনিদের বিচার করে না তাদের ওপর চাপ ও নজরদারি অব্যাহত রাখা জরুরি।

গণ ট্রাইব্যুনাল

দ্য হেগে একটি নতুন পিপলস ট্রাইব্যুনালে বার্নাবিউকে প্রধান কৌঁসুলি হিসাবে নির্বাচিত করা হয়েছিল যেটি সাংবাদিকদের হত্যার তদন্ত করবে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য দায়মুক্তির অবসানের আন্তর্জাতিক দিবস ২ নভেম্বর প্রথম শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে৷

ট্রাইব্যুনালের কাউকে শাস্তি বা সাজা দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে না, তবে এর সঙ্গে যুক্তরা বলছেন সরকারী নেতাদের আদালতে উপস্থিত হওয়ার সম্ভাবনা যদি নাও থাকে তারপরও পরিস্থিতি এবং জড়িত সন্দেহভাজনদের তদন্ত করার প্রক্রিয়া বিশ্বব্যাপী সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে উপকৃত করবে।

XS
SM
MD
LG