অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইইউতে ১ লাখ বাংলাদেশী আশ্রয়প্রার্থী


ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৯ লাখ আশ্রয়প্রার্থীকে নিয়ে এখন রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় এক লাখ বাংলাদেশী রয়েছেন। যাদের অপেক্ষার পালা যেন আর শেষ হচ্ছে না।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৯ লাখ আশ্রয়প্রার্থীকে নিয়ে এখন রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় এক লাখ বাংলাদেশী রয়েছেন। যাদের অপেক্ষার পালা যেন আর শেষ হচ্ছে না। বছরের পর বছর ধরে অপেক্ষা করতে করতে তারা এখন নরকের প্রান্তে। এরা দেশেও ফিরতে পারছেন না, আশ্রয়ের আবেদনও ঝুলে আছে। ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালিতেই বেশি আশ্রয়প্রার্থী।

ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুুযায়ি দুই বছর আগে যখন মহাদেশটিতে প্রায় ১১ লাখ অভিবাসী আটকা পড়েছিল তখনকার তুলনায় এখনও প্রায় সম পরিমান আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার আবেদন জমা পড়ে আছে। অভিবাসীদের জন্য কাজ করা জার্মানির সব থেকে বড় সংস্থা প্রো এসাইলের সদস্য কার্ল কপ বলেছেন, আটকে পড়া এই আশ্রয় প্রার্থীদের জন্য দুর্দশাগ্রস্থ জীবন এখন অনেকটা স্বাভাবিক। তারা গ্রিসের ইইউ হটস্পটে করুণ জীবন যাপন করছে। অনেকে নানা ফাঁদে পা দিচ্ছে। কিংবা তাদেরকে সীমান্ত এলাকায় সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। তাদের জীবনের মানে হচ্ছে নিরাপত্তা ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য আপ্রাণ এক লড়াই।

ইউরোপীয় সরকারগুলোর অভিবাসী নিয়ে নতুন আইন ও অধিক মাত্রায় আবেদন প্রত্যাখ্যানের কারণে নতুন করে আবেদনের প্রক্রিয়াও শ্লথ হয়ে গেছে।
গত তিন বছরে ইউরোপীয় দেশগুলোতে এই প্রত্যাখ্যানের মাত্রা প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৬ সালে যেখানে এই হার ছিল ৩৭ শতাংশ। ২০১৯-এ তা দাঁড়িয়েছে ৬৪ শতাংশে। ইতালিতে ২০১৯ সালে ৮০ভাগ আবেদনই প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। বাংলাদেশের এই বিপুল সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থীকে নিয়ে ঢাকা-ব্রাসেলস তিন দফা আলোচনার পর একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ি যারা সেচ্ছায় দেশে ফিরবে তাদেরকে প্রণোদনা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ চুক্তির আওতায় ২০১৭ থেকে এ পর্যন্ত মাত্র ১৯০ জন বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন। ঢাকার বিদেশ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মনে করেন, বিষয়টি অমানবিক হলেও অভিবাসীদের দেশে ফেরত আনা হলে অদূর ভবিষ্যতে এর সুফল পাওয়া যাবে। একদিকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বাড়বে, অন্যদিকে ইউরোপে ভিসা প্রাপ্তি সহজ হবে।

বিরোধী রাজনীতিতে জড়িত থাকার কারণে গেপ্তার, নির্যাতন, মামলাসহ নানা কারণে হাজার হাজার বাংলাদেশী রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। ইউরোস্ট্যাটের হিসাব অনুযায়ি ২০১৮ সালে সব থেকে বেশি অবৈধ অভিবাসী আশ্রয় নিয়েছে জার্মানিতে। ওই সময় দেশটিতে প্রবেশ করে ১ লাখ ৩৪ হাজার অবৈধ অভিবাসী। ১ লাখ ৬ হাজার অভিবাসীকে আশ্রয় দিয়ে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। ওদিকে ইউএনএইচসিআর এর তথ্য অনুযায়ি গত পাঁচ বছরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন ১ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশী। আগের পাঁচ বছরের তুলনায় এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।

মতিউর রহমান চৌধুরী, লন্ডন

please wait

No media source currently available

0:00 0:02:26 0:00

XS
SM
MD
LG