অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

পশ্চিম বঙ্গে ভবানীপুর বিধান সভার উপনির্বাচন : মমতার জন্য স্বস্তি


ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়ছেন। ১৬ই মে, ২০১৯, ছবি- রয়টার্স/রুপক দে চৌধুরী
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়ছেন। ১৬ই মে, ২০১৯, ছবি- রয়টার্স/রুপক দে চৌধুরী

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের দুশ্চিন্তা নিরসন করে ভারতের নির্বাচন কমিশন আজ শনিবার বিকেলে জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বর ১৩ই সেপ্টেম্বর সেখানে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন, আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৬ই সেপ্টেম্বর। ভোট গণনা ও ফল প্রকাশ হবে তেসরা অক্টোবর। একই সঙ্গে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্রেও ভোট হবে। তবে ওই দুই কেন্দ্রে প্রার্থীরা ভোটের আগেই মারা গিয়েছিলেন বলে উপনির্বাচন নয়, সাধারণ নির্বাচনই হবে।

নির্বাচন কমিশনের আজকের এই ঘোষণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর চিরাচরিত কেন্দ্র ভবানীপুর ছেড়ে তিনি গিয়েছিলেন নন্দীপুর বিধানসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে। তাঁর এককালীন স্নেহভাজন, পরবর্তীকালে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে ভোটে দাঁড়ালেও অল্প ব্যবধানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে হেরে যান। তা সত্ত্বেও তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থীদের সঙ্গে তিনি যখন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন, তখনই বোঝা গিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী থাকতে চান তিনি। কিন্তু তার জন্য সংবিধানের নিয়ম অনুসারে ভোটের ফল ঘোষণার ছয় মাস, অর্থাৎ নভেম্বর মাসের মধ্যে তাঁকে কোনও আসনে জয়ী হয়ে আইনসভার সদস্য হতেই হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার পর তাঁর ছেড়ে যাওয়া ভবানীপুর আসনে প্রার্থী হন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং বিজেপি প্রার্থী, অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বিপুল ভোটেরুদ্রনীল ঘোষকে হারিয়ে জয়ী হন। গত জুন মাসে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন শোভনদেব। এখন তাঁকেও মন্ত্রী থাকতে হলে কোনও কেন্দ্র থেকে ভোটে জয়ী হয়ে বিধানসভায় আসতে হবে। বোঝা যাচ্ছে, মমতা তাঁর পুরনো কেন্দ্র ভবানীপুরে ফিরে আসতে চান বলেই শোভনদেব আসনটি তাঁকে ছেড়ে দিয়েছেন। ওদিকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও কোনও না কোনও আসনে জয়ী হয়ে বিধানসভার সদস্য না হলে অর্থমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। কারণ, স্বাস্থ্যের কারণে এবারে তিনি কোনও আসনেই প্রার্থী হননি।

আজ নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা ভবানীপুর কেন্দ্রে ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগামীকাল উত্তরবঙ্গ সফরে যাওয়ার কথা ছিল। সেই সফর তিনি বাতিল করে দিয়েছেন।

বিরোধী দলগুলো শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য ভবানীপুর কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করানো হচ্ছে কেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাইলে কমিশন জানায়, সাংবিধানিক সঙ্কট এড়ানোর জন্যই ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে।

রাজ্যে আরও চারটি কেন্দ্রে ভোটের পর প্রার্থীর মৃত্যু অথবা দলত্যাগের জন্য উপনির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির কারণে আর কোথাও উপনির্বাচন ঘোষণা করা হয়নি।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কমিশনের এই আচরণকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিহিত করেছেন। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, নির্বাচন সঠিক সময়ে হোক তাঁরা চান। কিন্তু সেই সঙ্গে চান পুরসভার ভোটও যেন তাড়াতাড়ি হয়। দীর্ঘ দিন পুরসভাগুলিতে নির্বাচন না হওয়াতে সাধারণ মানুষ নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

XS
SM
MD
LG