তালিবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি শুক্রবার ইসলামাবাদে বলেছেন, আফগানিস্তানে বিশাল সামরিক বাহিনীর প্রয়োজন নেই এবং পূর্ববর্তী প্রশাসনের অধীনে যারা আফগান জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাহিনীতে (এএন্ডএসএফ) কাজ করেছেন তাদের সকলকেও রাখা হবে না।
পাকিস্তান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত একটি নীতি নির্নায়ক সংস্থা, ইনস্টিটিউট অফ স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের এক প্রকাশ্য আলোচনায অনুষ্ঠানে মুত্তাকি বলেন, "বিদেশী হস্তক্ষেপে যে সেনাবাহিনী তৈরি করা হয়েছিল আমাদের আর সেই বিশাল সংখ্যক সেনার প্রয়োজন নেই।"
তালিবান যোদ্ধা এবং এএনডিএসএফ সদস্যদের একীভূত করে একটি একক সামরিক বাহিনী গঠন করা বিষয়ক তালিবানের কৌশল সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। অতীতে তালিবান ইঙ্গিত দিয়েছিল যে তারা দেশটি দখল করতে পারলে বিষয়টি বিবেচনা করবে।
তিনি বলেন, তার দেশের ছোট একটি সেনাবাহিনীর প্রয়োজন “যাদের অন্তর বিশ্বস্ততা ও প্রতিশ্রুতি এবং দেশপ্রেমে পূর্ণ।”
অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে পাকিস্তানে বাণিজ্যের পথ খোলা নিয়ে আলোচনার জন্য তালিবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে সফরে যান। বৃহস্পতিবার তিনি যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং রাশিয়ার আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা আফগানিস্তান বিষয়ক আলোচনার লক্ষ্যে ট্রইকা প্লাস ফরম্যাটের অধীনে পাকিস্তানে অবস্থান করছিলেন। ট্রইকা প্লাস ফরম্যাট হচ্ছে আফগানিস্তান বিষয়ে আলোচনায় ঐ তিনটি দেশ এবং পাকিস্তান।
মুত্তাকিকে তার প্রশাসনে মানবাধিকার এবং এর অন্তর্ভুক্তির বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কর্তৃক আফগানিস্তান ইস্যুকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “গতকাল পর্যন্ত বিরোধী দল অর্থাৎ তালেবানের প্রাপ্য ছিল মরে যাওয়া। তখন সেটা (মানবাধিকার) লঙ্ঘন ছিল না আর আজ এটা একটি লঙ্ঘন।” তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ২০ বছরেও শেখেনি যে তালিবানের ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল দিয়ে কাজ হয় না।
তিনি আরও দাবি করেন যে বর্তমান তালিবান প্রশাসন অন্তর্ভুক্তিমূলক, কারণ এতে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সদস্যদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে তিনি জোরের সঙ্গে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে তাদের প্রশাসনে অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য করানোর চেষ্টা করছে যা অন্য কোন স্থানেও স্বাভাবিক নয়।