যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন শুক্রবার জেনেভায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সাথে বৈঠকে ইউক্রেনের সঙ্গে তার সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর জন্য "অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে" রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানাবেন।
রাশিয়া তার প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনকে আক্রমণ করার পরিকল্পনা করছে এমন ক্রমাগত আশঙ্কার মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্টের সাথে আলোচনার জন্য ব্লিংকেন এই সপ্তাহে ইউক্রেনে যাচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, "আমরা এখন এমন এক পর্যায়ে আছি যেখানে রাশিয়া যেকোনো সময় ইউক্রেনের ওপর হামলা চালাতে পারে”। তিনি আরও বলেন, মস্কো যদি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আরও সামরিক আগ্রাসন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র “একটি ভিন্ন পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকছে”।
রাশিয়া তার সৈন্য সংগ্রহ এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তার কড়া বাগাড়ম্বর অব্যাহত রেখেছে এবং সপ্তাহান্তে রাশিয়ান বাহিনীকে বেলারুশে স্থানান্তরিত করেছে।
"কূটনীতি মৃত নয়," পররাষ্ট্রে বিভাগের একজন পদস্থ কর্মকর্তা মঙ্গলবার একটি কল ব্রিফিংয়ের সময় সাংবাদিকদের বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে যে এই সংঘাত সফলভাবে সমাধানের একমাত্র উপায় কূটনীতি।"
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনার জন্য সে দেশে রওয়ানা দেওয়ার আগে মঙ্গলবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সাথে কথা বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ এই কথোপকথন সম্পর্কে একটি বিবৃতিতে বলেছে, "যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউক্রেনে রাশিয়ান সামরিক গঠনকে ঘিরে উত্তেজনা হ্রাস করার জন্য একটি কূটনৈতিক পথ অব্যাহত রাখার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন।"
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে যে, "যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অটুট প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং জোর দিয়েছেন যে ইউরোপীয় নিরাপত্তা নিয়ে যে কোনো আলোচনায় ইউক্রেন সহ নেটো মিত্র এবং ইউরোপীয় অংশীদারদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।"
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ বলেছে যে মঙ্গলবার দ্রুত পরিকল্পিত এই সফরে ব্লিংকেন বুধবার কিয়েভে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্যমিত্র কুলেবার সাথে দেখা করবেন।
ব্লিংকেন তারপরে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকের সাথে বার্লিনে যাবেন। পররাষ্ট্র বিভাগ বলেছে, ব্লিংকেন সেখানে রাশিয়ার সাথে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক যোগাযোগ এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আরও রুশ আগ্রাসন রোধ করার জন্য যৌথ প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করবেন।
ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তে আনুমানিক ১০০,০০০ রুশ সৈন্যের অবস্থান এই আশংকা সৃষ্টি করেছে যে মস্কো তার প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের পরিকল্পনা করছে। ইউক্রেন একসময় রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। ২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেন থেকে ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয়।
ইউক্রেন এবং অন্যান্য নিরাপত্তা ইস্যুতে মত পার্থক্য নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গত সপ্তাহে জেনেভায় রাশিয়ান ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার পর ব্লিংকেনের এই সফরের পরিকল্পনা করা হল। তবে ঐ বৈঠকের কোন অগ্রগতির খবর পাওয়া যায়নি।